শেষ আপডেট: 19th July 2024 18:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিষধর সাপের ছোবলে এক রাতে মৃত এক শিশু-সহ দু'জন! জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়িতে ওঝা-গুনিন দিয়ে চিকিৎসা করানোর মাসুল গুনতে হল নির্মম এই ঘটনায়। ওঝার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
জানা গেছে, জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকে বৃহস্পতিবার রাতে দু'টি পৃথক সাপের ছোবলের ঘটনা ঘটে। একটি ঘটনায় পশ্চিম শালবাড়ি এলাকার সুমন রায় নামে ১০ বছরের এক নাবালকের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতেরই বাগজান এলাকায় আরও এক ব্যক্তির সাপের ছোবলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তির নাম রতন সরকার, বয়স ৪৭।
সুমনের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়াদাওয়া সেরে বাবা-মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে ওই শিশুটি। সেই সময় বিষধর গোখরো সাপ ছোবল মারে তাকে। ছেলে যন্ত্রণায় ছটফট করলে তার মা-বাবা ওঠেন এবং বিষয়টি বুঝতে পারেন। এরপর প্রাথমিক ভাবে বাড়িতেই ওঝা ডেকে সাপের বিষ নামানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে অবস্থায় অবনতি হলে ময়নাগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
রতন সরকার গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ পুকুর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় বিষধর সাপ ছোবল মারে তাঁকে। পুকুর পাড়ে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকেন তিনি। বেশ খানিকটা সময় পার হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারলে তাঁকে উদ্ধার করে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে আসে হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ দু'টি মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি মর্গে পাঠিয়েছে।
এই ঘটনায় জলপাইগুড়ির পরিবেশকর্মী অমল রায় বলেন, 'সাপের কামড়ের পরে হাসপাতালে নিয়ে না এসে ওঝা কবিরাজ দিয়ে ঝাড়ফুঁক চলেছে। তাতে কাজ না হওয়ায় আজ সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ততক্ষণে শিশুটি মারা গিয়েছে। আমরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে লাগাতার সচেতনতা প্রচার করি। সাপে কামড়ালে প্রথম ১ ঘণ্টা মূল্যবান সময়। এর মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে এলে রোগীর মৃত্যু হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা গেল শিশুটিকে বাড়িতেই রেখে সময় নষ্ট করল। এ যেন ইচ্ছে করে বাড়িতে সময় নষ্ট করে বাচ্চাটিকে মেরে ফেলা হল।'
জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার অসীম হালদার জানিয়েছেন, 'আমরাও স্নেক বাইট নিয়ে লাগাতার সচেতনতা প্রচার চালাই। কিন্তু এত কিছুর পরেও মানুষ কিছুতেই সচেতন হচ্ছে না। ওঝার বিরুদ্ধে যদি লিখিত অভিযোগ হয় তবে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'