শেষ আপডেট: 14th November 2019 04:06
উপনির্বাচনে পৃথক ইস্তাহার কেন তৃণমূলের, রাজনীতির অঙ্কটা কী মমতার
দ্য ওয়াল ব্যুরো: খড়্গপুর, কালিয়াগঞ্জ ও করিমপুর বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন আসন্ন। আগামী ২৫ নভেম্বর হবে ভোটগ্রহণ। তার আগে আজ ওই তিন বিধানসভা কেন্দ্রওয়াড়ি নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। ভাবা যায়! অতীতে বারবার দেখা গিয়েছে, উপনির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রচারে পর্যন্ত যান না। দলের দ্বিতীয় সারির নেতারাই সামলে দেন। সে জায়গায় এ বার নজিরবিহীন ভাবে উপনির্বাচনের ইস্তাহার প্রকাশ করা চমক বইকি। স্বাভাবিক ভাবেই অনেকে ধরে নিয়েছেন যে, ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর এখন যেহেতু তৃণমূলের নির্বাচনী ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন, তাই পেশাদারিত্ব দেখাচ্ছেন। কিন্তু তৃণমূলের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, ইস্তাহার প্রকাশের তুলনায় অনেক বড় তার নেপথ্য রাজনীতি। মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই কৌশল এটা। প্রশান্ত সেটিকে একটা জামা পরিয়েছেন মাত্র। কী কৌশল? তা হল, উপনির্বাচনের ভোট-বিতর্ককে স্থানীয় বিষয় তথা লোকাল ইস্যুর মধ্যে বেঁধে রাখা। কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার, রাম মন্দির নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মতো বিষয় এই ভোটকে যাতে প্রভাবিত করতে না পারে। কারণ, তৃণমূলের আশঙ্কা জাতীয় স্তরের এই সব ইস্যুতে ভোট হল ফের ধর্মীয় মেরুকরণের শঙ্কা রয়েছে। তাতে বিজেপি তুলনায় বেশি সুবিধা পেতে পারে। ঠিক যে ভাবে লোকসভা ভোটে তারা পেয়েছিল। এ জন্যই ইস্তাহার প্রকাশ করে স্থানীয় সমস্যা, তার সমাধান ও এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছে তৃণমূল। খড়্গপুরে প্রচারে গিয়ে পরিবহণ ও সেচ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী তাই বলেছেন, এই উপনির্বাচনের ফলে বাংলায় সরকার বদল হবে না। এলাকার কাজ করাতে হলে তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকারের জয় সুনিশ্চিত করুন। বলাবাহুল্য, এর উল্টোটাই করছে বিজেপি। ভোট প্রচারে মুকুল রায়-কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা বার বার টেনে আনছেন রামমন্দির নির্মাণের প্রসঙ্গ। প্রসঙ্গত, খড়্গপুর ও করিমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক যথাক্রমে বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং তৃণমূলনেত্রী মহুয়া মৈত্র লোকসভা ভোটে জিতেছেন। সেই কারণে সেখানে উপ নির্বাচন করাতে হচ্ছে। আর কালিয়াগঞ্জে কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়ের মৃত্যু হওয়ায় উপভোট হচ্ছে সেখানে। এর মধ্যে খড়্গপুর ও কালিয়াগঞ্জে লোকসভায় এগিয়েছিল বিজেপি। তৃণমূল এগিয়ে ছিল করিমপুর বিধানসভায়। অনেকের মতে, করিমপুরের একটি ব্লকে সংখ্যালঘু ভোট আশি শতাংশ। তাতেই সুবিধা পেয়েছিল শাসক দল।