শেষ আপডেট: 24th November 2022 08:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পশ্চিম মেদিনীপুর: সামান্য স্কুল-নির্বাচনে হার (School Election)। তাতেই তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল খড়্গপুরের এক তৃণমূল কাউন্সিলরের (Khragpur TMC Councilor) বিরুদ্ধে। আতঙ্কে হাউহাউ করে কেঁদেই ফেললেন প্রধান শিক্ষক (Principal)।
মঙ্গলবার ছিল খড়্গপুর শহরের তেলেগু বিদ্যাপীঠের পাবলিক ইন্টারেস্ট অফ এডুকেশনের (পিআইই) প্রতিনিধি নির্বাচন। প্রার্থী হয়েছিলেন দুজন। একজন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বান্টা মুরলী। অপরজন এলাকারই প্রাক্তন শিক্ষক এম কালী দাস। শিক্ষক এবং অভিভাবক প্রতিনিধি মিলিয়ে ভোটার ছিলেন ১১ জন। সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক (AI)-এর উপস্থিতিতে এবং প্রধান শিক্ষকের পরিচালনায় ভোট সম্পন্ন হয় নির্বিঘ্নে। বিপত্তি বাধে ফলাফল প্রকাশের পর। কাউন্সিলর বান্টা ৭-৪ ব্যবধানে পরাজিত হন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এই পরাজয় মেনে নিতে না পেরে স্কুলে তাণ্ডব শুরু করেন বান্টার অনুগামীরা। শুধু তাই নয়, ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগও উঠেছে। বিজয়ী প্রার্থী এম.কালী দাসও খড়্গপুর টাউন থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন।
ধনকড়কে স্বাগত জানানোর দায়িত্ব দেওয়া হল বীরবাহা ও জ্যোৎস্নাকে, এ মাসেই আসার কথা
যদিও, এসবের পরোয়া না করে, বান্টা মুরলী এই ফলাফল ভেস্তে দিয়ে ফের নির্বাচনের জন্য চাপ দেন। শেষমেশ তাঁর চাপের কাছে নতিস্বীকার করে আবার নির্বাচনের প্রস্তাব মেনেও নেওয়া হয়! স্কুলের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে নোটিশ। এই ঘটনার বিষয়ে বুধবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি ক্যামেরার সামনেই হাউহাউ করে কেঁদে ফেলেন! স্বীকার করেন, তিনি আতঙ্কে আছেন।
অপরদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে বান্টা জানিয়েছেন, তাঁকে অভিভাবকরা আগেই পাবলিক ইন্টারেস্ট অফ এডুকেশনের (পিআইই) প্রতিনিধি হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। স্কুল সেটা মানেনি। উল্টে নির্বাচনে কারচুপি করেছিলেন প্রাক্তন ওই শিক্ষকমশাই। তাই ফের নির্বাচনের নোটিস দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হচ্ছে। আমি যদি গন্ডগোল করতেই চাইতাম, তাহলে তো নির্বাচনে হারতামই না! যা হোক করে জিতে যেতাম!”
ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, “আপনারাই বুঝে নিন, রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন কী রকম হবে! মুখ্যমন্ত্রী যতই শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বুলি আওড়ান না কেন, যাঁরা সামান্য স্কুল নির্বাচনে ব্যালট ছিনতাই করে, তাদের অভিসন্ধি বোঝাই যাচ্ছে।”
জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি বলেন, “দিলীপ ঘোষ গ্রামে যান না। মানুষের কী সমস্যা সে সম্পর্কে কোনও ধারণা নেই। এখানে বসে সরল অঙ্ক কষে ফেলেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের উন্নয়ন করছেন। তাই মানুষ ভোট দিচ্ছে। ভোটে জিততে তৃণমূলকে ব্যালট ছিনতাই করতে হয় না। এই সহজ সত্যিটা দিলীপবাবুকে বুঝতে হবে।”
তবে বিদ্যালয়ের সামান্য এই নির্বাচন ঘিরে এমন যদি এমন ছবি সামনে আসে তাহলে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী হতে চলেছে? এলাকার সাধারণ মানুষের মুখে এখন এটাই প্রশ্ন।