শেষ আপডেট: 9th October 2021 13:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নন্দীগ্রামে বিজেপি কর্মী খুনে শুক্রবারই হলদিয়া আদালতে চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। চার্জশিটে শেখ ফতেনুর, শেখ মিজানুর ও শেখ ইমদুলাল ইসলামের নাম রয়েছে। তবে নন্দীগ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) মামলায় যার নাম সবচেয়ে আগে উঠে এসেছিল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের নাম ছিল না চার্জশিটে। কিন্তু আজ শনিবার আচমকাই এই মামলা অন্যদিকে মোড় নিল। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১১ জনকে ডেকে পাঠিয়ে গ্রেফতার করেছে সিবিআই যাদের মধ্য়ে সুফিয়ানের জামাই সহ তৃণমূলের একঝাঁক নেতাকর্মীর নাম রয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় নন্দীগ্রামে তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় প্রথমে তিনজনের নামে চার্জশিট পেশ হয়েছিল। আজ আরও ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে--শেখ সাহাউদ্দিন, শেখ বাইতুল ইসলাম, শেখ হাবিবুল, শেখ মুখতার রহমান, শেখ মহিদুল ইসলাম, হায়াতুল ইসলাম শেখ, শেখ আতুল রহমান, শেখ মুখতাদির, শেখ মুস্তাক রহমান, আবদুল হাই শেখ এবং শেখ নাজিরুল ইসলাম। ধৃতদের মধ্যে সাহাউদ্দিন কেন্দেমারি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। শেখ বাইতুল ইসলাম নন্দীগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী এবং শেখ হাবিবুল মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। তাছাড়া হাবিবুল সুফিয়ানের জামাই। একুশের বিধানসভা ভোটের ফল বেরনোর পর নন্দীগ্রামের চিল্লোগ্রামে গত ৩ মে বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতিকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধরের অভিযোগ ওঠে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি কর্মীর অবস্থা এতটাই সঙ্কটজনক ছিল যে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা করানো হয়। এখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। দেবব্রত মাইতি হত্যাকাণ্ডে নাম জড়ায় শেষ সুফিয়ান সহ আরও দুই তৃণমূল নেতার। এই শেখ সুফিয়ান ছিলেন নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট। বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় শেখ সুফিয়ানকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। কেন মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্টকে তলব করা হল সেই নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় হয়েছিল। ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা ছাড়াও ২০০৭-২০০৯ সাল পর্যন্ত নন্দীগ্রামে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল সুফিয়ান, আবু তাহের, শেখ সামাদ সহ তৃণমূলের মুখিয়া নেতাদের বিরুদ্ধে। মামলা গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট অবধি। বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি কৃষ্ণ মুরারির এজলাসে সেই মামলার শুনানি হয়েছিল। দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানায় স্থগিতাদেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। বিচারপতিদের বেঞ্চ জানিয়েছিল, পুরনো মামলায় গ্রেফতার করা যাবে না মুখ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এজেন্ট সুফিয়ানকে। সেই মামলা নতুন করে চালু করার আর্জি জানিয়ে হাইকোর্টে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চে ফের পিটিশন দাখিল হয়েছিল। বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মুখ শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, “তৃণমূল এখন আমিরুল, সুফিয়ান, সামাদ, শাহবুদ্দিনদের হাতে। যারা পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচে জিতলে বোম ফাটায়।“ নন্দীগ্রামে জাহাজবাড়ির মালিক সুফিয়ান নাকি বিশাল সম্পত্তিও বানিয়েছেন সেখানে। বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি খুনের ঘটনায় গোড়া থেকেই সুফিয়ানকে জেরা করেছেন তদন্তকারী অফিসাররা। কিন্তু হলদিয়া আদালতে যে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে তাতে নাম নেই সুফিয়ানের। গোটাটাই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সুফিয়ান। তাঁর বক্তব্য, বিজেপির প্ররোচনাতেই সিবিআই বার বার তলব করেছিল তাকে। এবার তার জামাইকে গ্রেফতার করা হল। পড়ুন দ্য ওয়ালের সাহিত্য পত্রিকা 'সুখপাঠ'