দ্য ওয়াল ব্যুরো: আজ বাংলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সব ঠিক থাকলে সকাল সওয়া দশটাতেই কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছনোর কথা তাঁর। আকাশপথে ঘুরে দেখবেন দুর্যোগ কবলিত এলাকাগুলি। অনেকেই মনে করছেন, বাংলার এই পরিস্থিতিতে এবং বাংলার রাজনীতিতেও আজকের দিনটি খুবই জরুরি।
সুপার সাইক্লোন উমফানের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গ। কার্যত তছনছ হয়ে গেছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলা। বুধবারের এই বিপর্যয়ের পরে বৃহস্পতিবার সকাল হতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করে ক্ষয়ক্ষতির খোঁজ খবর নিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তখনই মমতা জানিয়েছিলেন, "প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব এসে দেখে যেতে, কী ভয়াবহ বিপর্যয় গেছে। কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্য এখনই দরকার, অনেক দিন পরে পেয়ে লাভ নেই।"
অমিত শাহ টুইট করে জানান, বাংলাকে সবরকম সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এর পরেই দুপুর ১.৫০-এ টুইট করে মোদী লেখেন, “ঘূর্ণিঝড় উম্পুনে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ছবিতে দেখলাম। কঠিন এই সময়ে গোটা দেশই পশ্চিমবঙ্গের পাশে রয়েছে। রাজ্যের মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রার্থনা করছে দেশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
এর পরে বিকেলে নবান্নের বৈঠকেও এই ফোনকলের কথা এবং প্রধানমন্ত্রীকে বাংলায় আসতে অনুরোধ করার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই খবর আসে, আজ অর্থাৎ শুক্রবার সকালেই বাংলায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী।
জানা গেছে, আগামীকাল অর্থাৎ শুক্রবার সকাল ১০টা ১৫ নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে নামবেন প্রধানমন্ত্রী। তার পরে হেলিকপ্টারে করে যাবেন বসিরহাট। আকাশপথে ঘুরে দেখবেন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জের দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলবেন সম্ভব হলে। প্রশাসনিক বৈঠক করবেন বসিরহাটে। গোটা যাত্রীপথে হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে বসিরহাট থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে এসে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর দফতরের টুইটার হ্যান্ডেল থেকেও জানানো হয়েছে, "পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশায় উমফান বিপর্যয়ের পরিস্থিতি দেখতে যাবেন নরেন্দ্র মোদী। আকাশপথে পর্যবেক্ষণ করবেন। এর পাশাপাশি পর্যালোচনা বৈঠকেও যোগ দেবেন। ওই বৈঠকে ত্রাণ ও পুনর্বাসন নিয়ে আলোচনা হবে।"
https://twitter.com/PMOIndia/status/1263487665791352832
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আসার কথা নিশ্চিত হওয়ার পরেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতি শুরু হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরের। বুধবারের ঝড়ের দাপটে বড় ক্ষতি হয়ে গিয়েছে বিমানবন্দরের। মূল কাঠামো অর্থাৎ হ্যাঙ্গার ভেঙে গিয়েছে। জলে ভাসছিল গোটা বন্দর। বড় বড় বিমানগুলি কার্যত দুলছিল। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল কলকাতা বিমানবন্দর। কিন্তু গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই পাম্প চালিয়ে জল বের করা হয়েছে। রানওয়ে খুলে দেওয়া হয়েছে। জরুরি বিমান পরিষেবা শুরু হয়েছে।
একে করোনা ও তার জেরে লকডাউন নিয়ে এমনিতেই ব্যতিব্যস্ত বাংলা। এই নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে তার জোর টক্করও চলেছে একটানা কয়েক দিন ধরে। তার পরেই এসে পড়েছে মারাত্মক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সহজ কথায় বলতে গেলে, কোমর ভেঙে গেছে বাংলার। এই পরিস্থিতিতে মাত্র কয়েক ঘণ্টার নোটিসে প্রধানমন্ত্রীর বাংলায় আসার সিদ্ধান্তে অনেকেই মনে করছেন, বড় কোনও চমক অপেক্ষা করছে রাজ্যের জন্য। তবে সেটা শুধুই আর্থিক সাহায্য নাকি আরও অন্য কিছু, তা এখন দেখার।