শেষ আপডেট: 29 July 2022 06:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: প্রেমে পড়লে মানুষ কী না করতে পারে! সেই কবে শাহজাহান তাঁর ভালবাসাকে অমর করে রাখতে তাজমহল বানিয়েছিলেন। একে অপরকে ভালবেসে জীবন দিয়েছিলেন রোমিও-জুলিয়েটও। আর এবার ভালবাসার মানুষটির টানে সুদূর প্যারিস (Paris) ছেড়ে বাংলার পাণ্ডুয়ায় (Panduah) চলে এলেন এক ফরাসি কন্যা।
প্রেমিকা ফরাসি হওয়ায় কিছু তো সমস্যা হচ্ছেই। ভাষা সমস্যা রয়েছে দুজনের মধ্যেই। তবে প্রেমিক বলছেন, দুজনে দুজনের মনের ভাষা ঠিকই বুঝে নিচ্ছি। আর বাকি রইল বাড়ির সবার কথা। সেইজন্য গুগল ট্রান্সলেটর তো আছেই। তাতে সমস্যা মিটতেই নতুন বৌকে আপন করে নিয়েছে প্রেমিকের পরিবার।
ঋতুচক্র চলাকালীন গাছ লাগালে আগুন লেগে যাবে! নাসিকের স্কুলে আজব ফতোয়া শিক্ষকের
পাণ্ডুয়ার সেই যুবকের নাম কুন্তল ভট্টাচার্য (Kuntal Bhattacharya)। প্যারিসের বাসিন্দা প্যাট্রিসিয়া ব্যারোটার (Patricia Barrotta) সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখান থেকেই বন্ধুত্ব এবং ধীরে ধীরে প্রেম। চার মাসের পরিচয় তাঁদের। কুন্তল আগে কর্মসূত্রে দিল্লি থাকতেন। লকডাউনের সময় চলে আসেন পাণ্ডুয়ায়। বর্তমানে নিজস্ব ব্যবসা রয়েছে তাঁর।
ভালবাসার মানুষকে কাছে পেয়ে কুন্তল এখন আনন্দে আত্মহারা। তিনি জানান, 'সামাজিক মাধ্যমে পরিচয়ের পর চ্যাটিং এবং ভিডিও কল চলতে থাকে দুজনের। হঠাৎই দিন দশেক আগে একদিন প্যারিস থেকে নিউ দিল্লি এসে ফোন করে সারপ্রাইজ দেয় প্যাট্রিসিয়া। বলে আমি এসে গেছি। আমি তখন তাঁকে আরেকটা ফ্লাইট ধরে কলকাতায় চলে আসার কথা বলি'।
এরপর পাণ্ডুয়া থেকে ট্রেনে করে হাওড়া এবং তারপর বাসে চেপে দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছে যান কুন্তল। বিদেশিনী বান্ধবীকে নিয়ে আসেন নিজের বাড়িতে। কুন্তল বলেছেন, তাঁদের মনের বিয়ে হয়েই গেছে। এখন শুধুই সামাজিক বিয়েটুকু বাকি। ইন্টারনেটের যুগে পৃথিবীটা যেন আরও ছোট হয়ে হাতের তালুতে বন্দি হয়ে গেছে। তাই দুই ভিনদেশের দুটি মানুষের প্রেম এখন আর তেমন কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয় বলেই মনে করেন কুন্তল।
একসময় পান্ডুয়া থেকে ত্রিশ কিলোমিটার দূরে চন্দননগরে ফরাসিদের উপনিবেশ ছিল। স্বাধীনতার অনেক পরে সেই ফরাসিরা ফিরে গেলেও চন্দননগর, চুঁচুড়া এলাকায় এখনও তাঁদের স্থাপত্য, নিদর্শন আছে। প্যাট্রিসিয়ার সেই কথা জানা আছে কিনা জানা যায়নি, কিন্তু সেই এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি ফরাসিদের টান যে এখনও রয়েছে, তা আজ প্রমাণিত।