রফিকুল জামাদার
রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় ক্লাস এইট পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা তুলে দেওয়া নিয়ে বিতর্কের অবকাশ বরাবরই ছিল। সম্প্রতি এই পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনা হবে কিনা, তা নিয়েও আলোচনা চলছিল প্রশাসনিক স্তরে। অবশেষে বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপা
রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় ক্লাস এইট পর্যন্ত পাশ-ফেল প্রথা তুলে দেওয়া নিয়ে বিতর্কের অবকাশ বরাবরই ছিল। সম্প্রতি এই পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনা হবে কিনা, তা নিয়েও আলোচনা চলছিল প্রশাসনিক স্তরে। অবশেষে বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় 'দ্য ওয়াল'-কে টেলিফোনে জানালেন, ক্লাস ফাইভ এবং ক্লাস এইট-- এই দুই শ্রেণিতে পাশ-ফেল ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কেন্দ্রের পরামর্শে।
তবে অনেকেই মনে করছেন ক্লাস ফাইভ থেকে এইট পর্যন্ত সমস্ত ক্লাসেই পাশ-ফেল ফিরছে, আদতে তা নয়। পাশ-ফেল ফিরবে শুধু ফাইভ এবং এইটে। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, এই দুই শ্রেণিতে কেউ ফেল করলে, তাকে দু'মাস আলাদা করে ক্লাস করানো হবে। তার পরে ফের নেওয়া হবে পরীক্ষা। তাতে পাশ করলে তবেই পরের ক্লাসে উঠতে পারবে পড়ুয়া। কিন্তু তাতেও পাশ করতে না পারলে একই ক্লাসে থাকতে হবে।
কিছু দিন আগে মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন পাশ-ফেল প্রথা ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেছিলেন, "কেন্দ্রীয় সরকার বিল পাশ করে অনুমোদন দিলে তবেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমাদের আগে জানাবে, তারপরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনও কেন্দ্রীয় সরকার কোনও সিদ্ধান্তের কথা আমাদের জানায়নি।"
বৃহস্পতিবার সেই সবুজ সিগন্যালই এল কেন্দ্র থেকে। পার্থবাবুর কথায়, "কেন্দ্রের পরামর্শ মেনেই দু'টি ক্লাসে পাশ-ফেল ফেরানোর সিদ্ধান্ত হল। এতে শিক্ষার মান বাড়বে বলে আশা করছি।"
রাজ্য সরকার অবশ্য অনেক আগেই জানিয়েছিল, পাশ-ফেল প্রথা চালু করতে চায়। কিন্তু এর পরেই বিতর্ক শুরু হয়। শিক্ষামহলের একটা বড় অংশ মনে করেন সর্বশিক্ষা অভিযানকে সফল করতে, স্কুলছুটের সংখ্যা কমাতে পাশ-ফেল প্রথা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। শিক্ষামন্ত্রী সে সময় বলেছিলেন, "আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দিয়ে আগেই জানিয়েছি পাশ ফেল প্রথা আমরা চালু করতে চাই। তবে আমাদের কিছু শর্ত আছে।’’
কিন্তু কী শর্ত তা খোলসা করেননি পার্থবাবু। সেই শর্ত অবশ্য এ দিনও পরিষ্কার হয়নি, তবে মনে করা হচ্ছে, দু'মাস বিশেষ ক্লাস করিয়ে আরও একটা পরীক্ষা নিয়ে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াকে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার কথাই বলতে চেয়েছিলেন মন্ত্রী। এতে হয়তো হঠাৎ করে পাশ-ফেল চালু করা নিয়ে যে ক্ষোভ ঘনিয়ে ওঠার সম্ভাবনা ছিল, তা আর থাকবে না।