দ্য ওয়াল ব্যুরো: ডিভিশন বেঞ্চ বলে দিয়েছিল, বুধবার অর্থাৎ ১৪ ডিসেম্বর বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বসে রথযাত্রার সূচি ঠিক করতে হবে রাজ্যকে। তা আদালতকে জানাতেও হবে শুক্রবারের মধ্যে। কিন্তু সোমবারও রথযাত্রা নিয়ে বিজেপি ও রাজ্য সরকারের চাপানউতোর অব্যাহত রইল।
গত শনিবার বিজেপির তরফে মুকুল রায় ও জয়প্রকাশ মজুমদার সশরীরে নবান্নে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে তাঁরা জানতে চেয়েছিলেন কখন কোথায় আলোচনায় বসছে রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির পক্ষে জানানো হয়, বিজেপির তরফে মুকুল, জয়প্রকাশ ও প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় আলোচনায় বসবেন।
কিন্তু সোমবার রাজ্যের তরফে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, বিজেপির ওই প্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা রয়েছে। এমন নেতাদের সঙ্গে কী করে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ নেতারা আলোচনায় বসবেন! ফলে বিজেপির প্রস্তাবিত রথযাত্রা নিয়ে নতুন জটিলতা তৈরি হল।
বিচারপতি অবশ্য রাজ্য সরকারের এই কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘‘দেশের কোন নেতার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা নেই! তা ছাড়া আপনাদের ডিজি, আইজিদের বিরুদ্ধেও তো অনেক মামলা রয়েছে। এতে বৈঠকে বাধা কোথায়?’’ যদিও শেষ পর্যন্ত অ্যাডভোকেট জেনারেলের আবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তিনি ফের শুনানির সময় নির্ধারিত করেছেন।
বিজেপি অনেক আগেই এই রথযাত্রা নিয়ে অনুমতি চেয়েছিল রাজ্যের। রাজ্য সরকার হ্যাঁ বা না কিছুই না বলায় তারা সোজা আদালতের দ্বারস্থ হয়। চলতি মাসের ছ'তারিখে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর সিঙ্গেল বেঞ্চ রায় দেয়, ৯ জানুয়ারি অবধি স্থগিত রাখতে হবে রথযাত্রা। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, যেখান দিয়ে এই রথযাত্রা যাবে, সেখানে সেখানে ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ হতে পারে।
এই রায়ের পরে ফের নতুন করে আবেদন জানায় গেরুয়া বাহিনী। এর পরে বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে জানানো হয়, বিজেপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় বসুক রাজ্য সরকার। বিজেপির করা এই রথযাত্রা মামলায় গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বিজেপি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকে বসার। সেই বৈঠকে রাজ্যের ডিজি, মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবকে উপস্থিত থাকার নির্দেশও দেয় আদালত। বৈঠকে রথযাত্রা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি আলোচনা করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা কী ভাবে করা যায় তা-ও স্থির করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিজেপির দাবি, আদালতের ওই নির্দেশ পাওয়ার পরেই দলের তরফে মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তিন প্রতিনিধির নাম জানিয়ে বৈঠকের দিন স্থির করতে অনুরোধ করা হয়। রবিবার বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, রাজ্য প্রশাসন এ বারও চিঠির কোনও উত্তর দেয়নি।