শেষ আপডেট: 27th May 2020 05:21
মমতাকে জোড়া আক্রমণে দিলীপ,অধীর: পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আগে কেন সরকারি কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা হয়নি?
দ্য ওয়াল ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পুরোদস্তুর রাজনীতি করছেন বলে বুধবার জোড়া সমালোচনা করলেন দিলীপ ঘোষ ও অধীর চৌধুরী। তাঁদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর রাজনীতির জন্যই বাংলা বিপন্ন। নইলে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য আগে কেন সরকারি কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা নবান্ন করল না, সেটাই আশ্চর্যের। পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে বহু জেলায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এখন সরকারি কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা কি সন্দেহের উদ্রেক ঘটাচ্ছে না? দিলীপবাবু এও বলেন, হতে পারে মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছাকৃত ভাবেই আগে সরকারি কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করেননি। কারণ, উনি হয়তো দেখাতে চাইছিলেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। যাতে কেন্দ্রের উপর দোষারোপ করা যায়। রাজ্যের অনুমতির পরোয়া না করে পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনে চাপিয়ে বাংলায় পাঠানোর বিরুদ্ধে বুধবার তীব্র সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সরাসরি অভিযোগ, রেল গায়ের জোর দেখাচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁকে বিপদে ফেলতে গিয়ে বাংলাকে বিপদে ফেলছে কেন্দ্র। তবে এ কথা বলার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, তামিলনাড়ু ও দিল্লি থেকে পরিযায়ী শ্রমিক এলে তাঁদের সরকারি কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে। এ প্রসঙ্গে লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী এদিন রাতে বলেন, প্রথমত পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় ফেরানোর ব্যাপারে নবান্নের কোনও উদ্যোগ ছিল না। বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাংলার নোডাল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ব্যর্থ হন। পরে এক প্রকার বাধ্য হয়েই নবান্নকে মাথা ঝোঁকাতে হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এর আগেও তো মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, দিল্লি, গুজরাত থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাংলায় পৌঁছেছেন। তখন কেন সরকারি কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা মুখ্যমন্ত্রী করেননি। কেন স্কুলগুলিতে পরিযায়ী শ্রমিকদের থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিজের রাজ্যে ফিরতে দেওয়া সব রাজ্যের মানবিক দায়িত্ব। একই সঙ্গে সবার জানা ছিল, বাইরে থেকে শ্রমিকরা ফিরে এলে তাঁদের প্রয়োজনে পরীক্ষা করতে হবে। সেই সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হবে। বিহার, ওড়িশা, অসমের মতো প্রতিবেশী রাজ্য সবাই তা করেছে। কিন্তু বাংলা তা করেনি। অধীরবাবু আরও বলেন, শুরুতে রাজ্যে ট্রেন ঢুকতে দিচ্ছিল না তৃণমূল সরকার। কেন্দ্রের ঠ্যালা খেয়ে তার পর রাজি হয়েছে। নবান্নের দূরদর্শিতার অভাবেই ট্রেন না পেয়ে বহু শ্রমিক সড়ক পথে বাংলায় ঢুকেছেন। তাঁদের ঠিকানা পত্তর সরকারের কাছে নেই। কিন্তু ট্রেনে ফিরতে দিলে সবার মোবাইল নম্বর, ঠিকানা সরকারের কাছে থাকত। তাতে কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ে সুবিধা হত। অন্যদিকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “সবকিছুই গোলমাল করে ফেলছে সরকার। আর সে সবের জন্যই দায়ী মুখ্যমন্ত্রী। একাই সব করব ভাব আর কথায় কথায় মিথ্যা বলার জন্য রাজ্য ভুগছে। প্রথম থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিতে গররাজি ছিল সরকার। পরে মুখ্যমন্ত্রী বাধ্য হলেন। সবাই নিচ্ছে তাই নিতেই হল। কোনও পরিকল্পনা নেই। আগে থাকতেই স্কুলগুলিতে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা রাখা দরকার ছিল। কিন্তু কিছুই করেনি। এখন সরকারের জন্য পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে তাঁদের পরিবারের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। আরও ছড়াবে। আর এই সবকিছুর জন্য দায়ী থাকবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর একগুঁয়েমির জন্যই রাজ্যের সংকট বাড়ছে”।