দ্য ওয়াল ব্যুরো, নদিয়া : প্রেমিকার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। এরপরেই তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করল ওই যুবকের পরিবার। তারই ভিত্তিতে প্রেমিকা ও তাঁর বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করল পুলিশ। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে হরিণঘাটা থানার বড়জাগুলিতে।
জাগুলির দক্ষিণ ভৌমিক পাড়ার ভবতোষ দেবনাথ এর সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল তাঁরই পড়শি এক তরুণীর। ভবতোষের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তুরস্কে কাজ করতেন তিনি। পেশায় রাজমিস্ত্রী ওই যুবক সেখানে একটি কোম্পানির সুপারভাইজার ছিলেন। পরিবারে দুই ভাই, এক বোন ও বাবা-মা আছেন। তাঁরা জানান, দু'বছর আগেই রাজমিস্ত্রির কাজের জন্য তুরস্কে গিয়েছিলেন ভবতোষ। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ছুটিতে বাড়িতে আসেন। মার্চ মাসে আবার ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন শুরু হওয়ায় আর ফিরে যেতে পারেননি। তারপর থেকে কর্মহীন ছিলেন।
জানা গেছে, বিদেশে থাকাকালীন বাড়িতে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি মাসে মাসে প্রেমিকাকেও টাকা পাঠাতেন ভবতোষ। ভবতোষের পরিবারের দাবি, গত কয়েক মাস ধরে কাজে যেতে না পারায় প্রেমিকাকে টাকা দিতে পারেননি তিনি। তাই নিয়ে তাদের মধ্যে অশান্তি চলছিল।
ভবতোষের পরিবারের এক সদস্য জানান, রবিবার বিকেলে ফোন করে ভবতোষকে নিজের বাড়িতে ডাকেন ওই তরুণী। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর আসে প্রেমিকার বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছেন ভবতোষ। খবর পেয়ে ওই তরুণীর বাড়িতে পৌঁছন ভবতোষের বাড়ির লোকজন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে প্রথমে হরিণঘাটা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রেফার করা হয় কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরেই হরিণঘাটা থানায় ওই তরুণী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ভবতোষের পরিবার। যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওই তরুণীর পরিবার। তাঁদের দাবি, ছাদে বসে কথা বলছিলেন। সেই সময় অসাবধানে পড়ে যান। এরমধ্যে টাকা-পয়সা বা অন্য কিছু নিয়ে অশান্তির কোনও ব্যাপারই নেই।
ঘটনার তদন্তে নেমেছে হরিণঘাটা থানা পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রেমিকা ও তার বাবাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে। কথা বলা হচ্ছে পড়শিদের সঙ্গেও। সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।