শেষ আপডেট: 11th June 2020 18:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের নাখড়ায় পথে নেমে অবৈধ বালি পাচার রুখে দিলেন গ্রামের বাসিন্দারা। বালি বোঝাই একাধিক ট্র্যাক্টর আটকে রেখে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামবাসীরা প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন। পরে পুলিশ এসে গাড়িগুলিকে থানায় নিয়ে যায়। আটক করে চালকদের। সরকারকে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দামোদর নদ থেকে অবৈধ ভাবে বালি তুলে পাচার করা নতুন ঘটনা নয়। পাচারকারীদের ভয়ে চুপ থাকাই দস্তুর। বৃহস্পতিবার দুপুরেও তাই ঘটছিল। তবে নাখড়ায় সেই বালিবোঝাই গাড়ি আটকে দেন গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে সন্ধ্যার মুখে জামালপুর থানার পুলিশ নাখড়া গ্রামে হাজির হয়। বালি বোঝাই পাঁচটি ট্র্যাক্টর এবং ওই ট্র্যাক্টরের চালকদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অবৈধ বালির কারবার বন্ধে নাখড়া গ্রামের বাসিন্দারা হঠাৎ এই ভাবে রুখে দাঁড়ানোয় বালির ব্যবসায়ীরা অবাক। নাখড়া গ্রামের বাসিন্দা উদয় ঘোষ বলেন, “বেরুগ্রাম পঞ্চায়েতের শম্ভুপুর ঘাট থেকে প্রতিদিন অবৈধ ভাবে বালি তোলা হয়। সেই বালি চারশো থেকে পাঁচশোটি ট্র্যাক্টরে লোড করে সারা দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় পাচার করা হয়। সব জেনেও চুপচাপ বসে থাকে প্রশাসন।” ওই গ্রামেরই বাসিন্দা সঞ্জয় ধাড়া বলেন, “আনলক ওয়ান পর্ব চালু হওয়ার পর থেকে বেপরোয়া ভাবে বালি পাচার শুরু হয়েছে। এখন বালি বোঝাই ট্র্যাক্টরের দাপটে নাখড়া এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দারের রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। বেপরোয়া ভাবে বালি বোঝাই ট্র্যাক্টর চলাচলের কারণে এলাকার পড়ুয়ারা ভয়ে টিউশন পড়তে যেতে এবং কিংবা স্কুলে যেতে ভয় পায়।” আর এক গ্রামবাসী উত্তম ঘোষ বলেন, “এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার জন্যই এদিন গ্রামবাসীরা সকলে মিলে অবৈধ কারবার বন্ধ করতে পথে নামতে বাধ্য হয়েছে।” অবৈধ বালির কারবার বন্ধে নাখড়া গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে এদিন যোগ দেন জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সুনীল ধাড়াও। তিনি বলেন, “আমার বাড়ি নাখড়া গ্রামেই। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি শম্ভুপুর ঘাট থেকে অবৈধ ভাবে বালি তুলে ট্র্যাক্টরে লোড করে পাচার করা হয়। প্রতিদিন চারশো থেকে পাঁচশোটি ট্র্যাক্টরে ওই বালি পাচার করা হচ্ছে। বেপরোয়া ভাবে ট্র্যাক্টর চলাচলের ফলে এলাকার রাস্তাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” এদিন গ্রামবাসীরা মিলে যতগুলি বালি বোঝাই ট্র্যাক্টর আটকেছেন তার কোনওটির চালকই বালির বৈধ চালান দেখাতে পারেননি। সুনীল ধাড়া বলেন, “তা সত্ত্বেও ট্র্যাক্টর ছাড়ানোর জন্য বালির ব্যবসায়ীরা নাখড়া গ্রামে এসে অশান্তি শুরু করে। বেরুগ্রাম অঞ্চলে বালি লুঠ হচ্ছে কিন্তু সরকারের ঘরে কানাকড়িও জমা পড়ছে না। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার যে বালি পাচার হয়ে যাচ্ছে তার রাজস্ব সরকারের ঘরে জমা পড়লে সরকার আরও উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারত।” পাঁচটি ট্র্যাক্টর পুলিশ থানায় নিয়ে গেছে। সেগুলির চালকদেরও আটক করেছে। জামালপুর থানার এক আধিককারিক জানিয়েছেন এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট মামলা করা হবে।