শেষ আপডেট: 22nd June 2020 05:21
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোথাও কোনও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে জায়গা না পেয়ে বসিরহাটের মিনাখাঁ ব্লকের চাপালি অঞ্চলের নিমিচি গ্রামে এগারো জন শ্রমিককে রাখা হয়েছে মেছো ভেড়ির আলাঘরে। স্থানীয় সূত্রে একথা জানা গেছে। তাঁরা বাড়িতে যেতে চাইলেও পরিবারের লোকজন সকলের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে তাঁদের বাড়িতে ঢুকতে দেননি। তাই বাধ্য হয়েই তাঁরা সেখানে থাকছেন। তাতেও অবশ্য স্বস্তি নেই তাঁদের।
মেছো ভেড়ির আলাঘরে এখন তাঁরা থাকা-খাওয়া সবই করছেন। এখানেই তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এই জায়গাও এখন এড়িয়ে চলছেন গ্রামের মানুষজন। অনেকে দূর থেকে উঁকি মেরে দেখছেন। কাছে কেউ যাচ্ছেন না। সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। সোজা কথায় করোনার আশঙ্কায় এখন এই সব পরিযায়ী শ্রমিকরা কার্যত সামাজিক বয়কটের মুখে পড়েছেন।
[caption id="attachment_232086" align="aligncenter" width="1280"] সমস্যায় পড়েছেন ভিনরাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকরা।[/caption]
মিনাখাঁর ওই এলাকায় দিনের পর দিন করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরতে শুরু করার পরে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। একথা প্রশাসন থেকেও বলা হয়েছে। এই অবস্থায় অন্য রাজ্য থেকে ফেরার পরেও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে কেন তাঁদের জায়গা হল না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাঁদের সমস্যার কথা প্রশাসনকে জানানোর চেষ্টা করছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা জিয়ারুল মোল্লা বলেন, “লকডাউনের ফলে ওরা তামিলনাড়ু ও মহারাষ্ট্র প্রভৃতি রাজ্যে আটকে গিয়েছিল। লকডাউনের পরে তারা ঘরে ফিরেছে। এদিকে উমফানের ফলে টালি ও অ্যাজবেস্টসের ঘর পড়ে গেছে। ঘরে ফেরার পরে তাদের পরিবার তো তাদের কোনও জায়গাই দেয়নি। তারা এখন ভেড়ির আলাঘরে আটকে রয়েছে। সরকারি কোনও সাহায্য পাচ্ছে না। সরকার থেকে খাবারের ব্যবস্থাও করেনি।”
স্থানীয় বিধায়ক ঊষারানি মণ্ডল বলেন, “এদের কোনও স্কুলবাড়িতে রাখা হলে গ্রামের লোক আপত্তি করেন, বিক্ষোভ দেখান। সেই জন্য ব্লক থেকে এঁদের বলে দেওয়া হয়েছে স্থানীয় ভাবে থাকার ব্যবস্থা করে নিতে এবং নিজেদের বাড়ি থেকে খাবার পাঠাতে। এঁদেরও প্রথমে ব্লক থেকে স্থনীয় স্কুলে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। এঁদের ক্ষেত্রেও অন্যদের মতো একই রকম ব্যবস্থা করা হয়েছিল কিন্তু স্থানীয়দের আপত্তির জেরে তা সম্ভব হয়নি।”
শুধু এই গ্রাম ব্যতিক্রমী এমন নয়। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতেই পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য তৈরি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে তাঁদের থাকতে বাধা দেওয়া হয়। সেই করণে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে কোথাও মাঠের ধারে আবার কোথাও খালের পাশে তাঁদের জন্য প্লাস্টিক দিয়ে তাঁবু খাটানো হচ্ছে।