শেষ আপডেট: 12th May 2020 09:35
কাটোয়ার দাঁইহাটে অন্যরকম বিবাহবার্ষিকী, কচিকাঁচাদের সঙ্গে গল্প করলেন দম্পতি, ৩০০ জনকে দিলেন উপহার
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এক অন্য রকম বিবাহবার্ষিকী দেখল পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া মহকুমার দাঁইহাট। লকডাউনের মধ্যে এক সুখী ও অবস্থাপন্ন দম্পতি তাঁদের ত্রয়োদশ বিবাহবার্ষিকী পালন করলেন কচিকাঁচার সঙ্গে। একটু অন্যরকম ভাবে। উপহার অনেকেই দেন কিন্তু তার পাশাপাশি তাঁরা সময়ও কাটালেন কচিকাঁচাদের সঙ্গে। গল্প করলেন।
তিন বছরের এক সন্তানকে নিয়ে তেরো বছরের বিবাহিত জীবন দাঁইহাটের সিদ্ধার্থ বড়াল ও বিনীতা বড়ালের। প্রতি বছর আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে তাঁরা বিবাহবার্ষিকী কাটান। কখনও আবার স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে এই দিন বাইরে কোথাও কাটান ব্যবসায়ী সিদ্ধার্থ বড়াল। তবে দেশজুড়ে লকডাউন চলায় এবার সেসব কিছুই সম্ভব নয়। দীর্ঘ পঞ্চাশ দিন ধরে লকডাউনে গৃহবন্দী তাঁদের একমাত্র সন্তান রাজর্ষিকে দেখে তাঁরা অন্য রকম ভাবে দিনটি পালন করার কথা ভাবেন।
বিনীতা বড়াল বলেন, “যাঁরা অবস্থাপন্ন তাঁদের তেমন অসুবিধা হচ্ছে না। বাড়িতে ছুটির মেজাজে আছেন। কিন্তু যাঁরা দরিদ্র তাঁরা কেমন আছে তা জানতে ইচ্ছা করে। এক দিনের জন্য হলেও তাদের পাশে দাঁড়াতে ইচ্ছা করে।” সেই মতো এই দিনটি এলাকার ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
মঙ্গলবার বিবাহবার্ষিকীর দিনে তাঁরা দেখতে বেরোলেন কী ভাবে দিন কাটাচ্ছে এলাকার বাচ্চারা। যাদের বাড়িতে ছোট ছেলেমেয়ে আছে তাদের বাড়িতে পৌঁছে যান দম্পতি। তাদের সঙ্গে গল্প করে তাদের হাতে ছোট ছোট উপহার তুলে দেন দম্পতি। সিদ্ধার্থ ও বিনীতা জানান মহামারীর আশঙ্কা এবং সেই সঙ্গে দীর্ঘদিন লকডাউনের বন্দী জীবন কাটাতে বড়রাও হাঁপিয়ে উঠেছেন। ছোটদের অবস্থাও কাহিল। দীর্ঘদিন ধরে স্কুল বন্ধ। বাইরে খেলা বন্ধ। তাই এই বছর তাদের বিবাহবার্ষিকী বাচ্চাদের সঙ্গে কাটানোর কথা ভাবেন তাঁরা।
চকোলেট, বিস্কুট, কেক সঙ্গে আঁকার খাতা, রং, রুলকাঠ ও অন্য সরঞ্জাম ঘুরে ঘুরে এলাকার তিনশো শিশুর হাতে তুলে দেন তাঁরা। এক সঙ্গে এত উপহার পেয়ে বেজায় খুশি শিশুরা। উপহার তুলে দেওয়ার পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় হাত ধোওয়া, মাস্ক পরা ও একা বাড়ির বাইরে না যাওয়ার গুরুত্ব শিশুদের বুঝিয়ে দেন দম্পতি।