শেষ আপডেট: 4th July 2020 06:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া থানার সোনাকানিয়া এলাকায় গণপিটুনিতে মৃত্যু হল এক যুবকের। অভিযোগ, স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের জেরে সে শ্বশুরকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মারে। তারপরেই এলাকার লোকজন গণপিটুনি দেয় ওই যুবককে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মহম্মদ ইব্রাহিম মণ্ডলের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় পৃথিবা পঞ্চায়েতের কুলতলা এলাকার হাসান মণ্ডলের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই হাসান মণ্ডল তার স্ত্রীর উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতে শুরু করে। টাকার জন্যও মারাত্মক অত্যাচার করত। বাধ্য হয়েই বেশ কয়েক বার ‘ব্যবসা করার জন্য’ চাহিদা মতো টাকা দেওয়া হয়েছিল হাসান মণ্ডলকে কিন্তু নেশা করে ও জুয়া খেলে সে সব টাকা নষ্ট করে ফেলে। কয়েক দিন আগে সে ফের কুড়ি হাজার টাকা দাবি করে শ্বশুরের কাছে। টাকা না দিলে তার মেয়েকে খুন করে ফেলবে বলেও হুমকি দেয়। তাই বাধ্য হয়ে কয়েক দিন আগে মেয়েকে নিজের কাছে এনে রাখেন তাঁর বাবা। শুক্রবার সকালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় দু’জনের। পরে শুক্রবার গভীর রাতে বাড়ির ফটকে আওয়াজ শুনে মহম্মদ ইব্রাহিম মণ্ডল বাইরে বেরিয়ে এসে কোথায় শব্দ হয়েছে তা দেখতে যান। বেরিয়ে তিনি দেখেন কাছেই তাঁর জামাই হাসান মণ্ডল দুই হাতে দুটো দা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অভিযোগ, অতর্কিতে সে ইব্রাহিমের উপরে আক্রমণ করে। হাতে কোপ লাগায় চিৎকার করে ওঠেন তিনি। তখনই এলাকায় লোকজন জড়ো হয়ে যায়। অস্ত্র হাতে মারমুখী হাসান মণ্ডলকে দেখতে পেয়ে এলাকার লোকজন তাকে মারতে শুরু করে। গণপিটুনিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হাসান মণ্ডলের। বর্তমানে ইব্রাহিম মণ্ডল হাবড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গণপিটুনিতে সাড়ে দশটা নাগাদ হাসান মণ্ডলের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনায় খবর পেয়ে রাত আড়াইটে নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হাবড়া থানার পুলিশ। তারা দেহ উদ্ধার করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। সেখানেই পুলিশ মর্গে তার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। এলাকায় জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জেনেছে নিহত হাসান মণ্ডল আদতে বাংলাদেশি। কয়েক বছর আগে সে এদেশে এসে বসবাস শুরু করেছে। এদেশে তার নিকট আত্মীয় বলতে কেউ নেই। সে বহু লোকের থেকে টাকা নিয়ে শোধ করেনি। লোকজনকে মারধর করত। শ্বশুরবাড়ির লোকজনকেও মারধর করত। বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে থানায় তার নামে অভিযোগও জমা রয়েছে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার বা আটক করেনি।