শেষ আপডেট: 23rd May 2020 09:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সুপার সাইক্লোন উমফানের ধাক্কায় বিপর্যস্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ। বিদ্যুৎ নেই, জল নেই, সব মিলিয়ে তীব্র সংকটের মধ্যে রয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। পানীয় জল ও বিদ্যুতের দাবিতে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। একই দাবিতে বিক্ষিপ্ত ভাবে বিক্ষোভ অবরোধ চলছে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায়। পরিস্থিতি যখন এমনই তখন মানুষকে কিছুটা ধৈর্য্য রাখার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বেহালা ফ্লাইং ক্লাব থেকে হেলিকপ্টারে কাকদ্বীপ উড়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। বাড়ি থেকে বেহালা যাওয়ার পথে তারাতলা সিইএসসি অফিসের সামনে অসংখ্য মানুষের ভিড় দেখে কনভয় থামিয়ে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গাড়ি থেকে নেমে মানুষের কাছে গিয়ে আবেদন জানিয়ে বলেন, আমি সমস্ত পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। চেষ্টা চলছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার। তারাতলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমার বাড়িতেও লাইন (পড়ুন বিদ্যুৎ সংযোগ) নেই। ভূতের মতো আছি।" বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে পৌঁছে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "কেউ কেউ লোকজনকে ক্ষেপিয়ে রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছেন। আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, এটা করবেন না। এখন রাজনীতি করার সময় নয়।" বস্তুত উমফানের অভিঘাতে গোটা রাজ্যে এখন যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। জায়গায় জায়গায় গাছ পড়ে, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যেমন রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। তেমনই টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত। ভেঙে পড়েছে ইন্টারনেট ব্যবস্থাও। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমার ফোনও কাজ করছে না। আমি আমার মুখ্যসচিবের সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। জেলায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।" মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরও জানান তিনি এবং কলকাতার পুর প্রশাসক ববি হাকিম তিন-চারদিন ঘুমোননি। তাঁর কথায়, "১৭৩৭ সালে এমন ঝড় হয়েছিল। তারপর এইরকম হল। একটু সহ্য করতে হবে। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। সবটা সরকারের হাতে নেই।" বহু জায়গায় নাগরিকদের বক্তব্য, সিইএসসি সাড়া দিচ্ছে না। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আমি নিজে সিইএসসির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ওরা বলছে করোনার জন্য ৯০ শতাংশ লোক এদিক ওদিক ছিটকে গেছে। আজও বৈঠক হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে আরও লোক কাজে লাগানোর।" ওড়িশার ফণীর উদাহরণ টেনে মমতা বলেন, "ওদের দেড়মাস লেগেছিল বিদ্যুৎসংযোগ পুনর্গঠন করতে। এখানে তিনগুণ ঝড় হয়েছে। শহরে সাতদিন লাগবেই। গ্রামেগঞ্জে কতদিন লাগবে আমি জানি না।" বহু জায়গায় যে গাছ উপড়ে রয়েছে তা সরানোর লোক পাওয়া যাচ্ছে না। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সেই গাছ সরাতে পাড়ার ছেলে ও ক্লাবগুলোর কাছে আবেদন জানান। বারবার মমতা বলেন, নজিরবিহীন দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে বাংলা। সারা রাজ্যে এক কোটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে বলে জানান তিনি।