শেষ আপডেট: 25th February 2020 10:03
বাগনানে দেহ এল ডেথ সার্টিফিকেট ছাড়াই, শববাহীদের ছেড়ে দিল পুলিশও
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ডেথ সার্টিফিকেট ও অন্য কোনও নথি ছাড়াই তিন রাজ্যের নজরদারি এড়িয়ে এক ব্যক্তির দেহ চলে এল বিশাখাপত্তনম থেকে হাওড়ার বাগনানে। পৌনে ন’শো কিলোমিটার রাস্তায় কোথাও হল না কোনও তল্লাশি। মৃতের পরিবার খবর দেয় বাগনান থানায় কিন্তু গাড়ির চালক ও মৃতের সহকর্মীকে হাতে পেয়েও ছেড়ে দেয় পুলিশ। মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, সাত মাস আগে বিশাখাপত্তমে একটি সংস্থায় কাজ করতে যান বাগনানের কাঁটাপুকুর গ্রামের বাসিন্দা সুরজিৎ সামন্ত। সপ্তাহ খানেক ধরে তাঁর ফোন সুইচড অফ ছিল। স্বভাবতই চিন্তায় পড়ে যায় সুরজিতের পরিবার। রবিবার সুরজিতের কর্মস্থল থেকে তাঁর ভাই অভিজিতের কাছে ফোন আসে যে সুরজিৎ মারা গেছেন, তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সোমবার সকালে দেহ কোলাঘাটে চলে আসে, সেখান থেকে অভিজিতের কাছে ফোন আসে এবং জানতে চাওয়া হয় কোথায় কী ভাবে দেহটি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সন্দেহ হওয়ায় পুলিশে খবর দেন অভিজিৎ। পুলিশ দু’পক্ষকেই ডেকে পাঠায়। দেহটি থানায় রেখে গাড়ির চালক ও তাঁর সঙ্গীকে (যিনি নিজেকে সংস্থার কর্মী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন) ছেড়ে দেয় পুলিশ, ডেথ সার্টিফিকেট ও অন্য কোনও আইনি নথি দেখতে না চেয়েই। অভিযোগ তেমনই। পরে দেখা যায় যে মৃতের কোনও ডেথ সার্টিফিকেট নেই। চিকিৎসা করা হয়েছিল – এই মর্মে লেখা একটি কাগজ থাকলেও কোন রোগের চিকিৎসা, কী হয়েছিল – সেসবের কোনও উল্লেখই নেই ওই কাগজে। মৃত্যুর কারণও লেখা নেই। এক কথায় আইন অনুযায়ী মৃতদেহ বহনের কোনও নথিই ছিল না। এই অবস্থায় অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম থেকে ওড়িশা হয়ে কী ভাবে দেহটি চলে এল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বাগনান থানা এব্যাপারে প্রথমে কোনও অভিযোগ নিতে চায়নি বলে অভিযোগ। পরে অবশ্য অভিযোগ নেওয়া হয় তবে তার কোনও প্রাপ্তিস্বীকার (অ্যাকনলেজমেন্ট) পরিবারকে দেওয়া হয়নি। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, যারা এতদূর দেহ বহন করে আনল তাদের ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েই দায় সেরেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি অন্য রাজ্যে থেকে এসেছে তাই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। দেহটি এনেছিলেন একজন চালক ও একজন অস্থায়ী কর্মী, তাই তাঁদের আটক করা হয়নি। পরিবারের লোকজন প্রশ্ন তুলেছেন হাইওয়েতে পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে। উপযুক্ত নজরদারি থাকলে আদৌ দেহটি এতদূর আনা সম্ভব হত কিনা তাঁরা সেই প্রশ্নও তুলেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, সত্যিই নজরদারি নেই নাকি ইচ্ছাকৃত ভাবেই নজর দেওয়া হচ্ছে না তাই নিয়ে।