শেষ আপডেট: 21st July 2020 07:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো, হুগলি: শ্রীরামপুরের প্রভাসনগরের নয়ঘর কলোনিতে এক মত্ত যুবকের হাত থেকে বাঁচতে গিয়ে মৃত্যু হল গৃহবধূর। মৃতার নাম দীপালি মুখোপাধ্যায়, বয়স ৪৩ বছর। ঘটনার সময় তাঁর স্বামী বাড়িতে ছিলেন না। ছিলেন তাঁর দৃষ্টিহীন ভাই। অভিযুক্ত মদ্যপ যুবক অমল সমাদ্দার ওরফে বাপিকে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যায় দীপালির স্বামী খোকন মুখোপাধ্যায় বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী (তিনিও দৃষ্টিহীন) বাড়িতে ছিলেন। দীপালির ভাই দেখতে না পেলেও কর্মক্ষম এবং মোবাইল ব্যবহার করে ফোন করতে পারেন। তাঁদের বাড়ি রাস্তার ধারে। অভিযোগ, সন্ধ্যা সাতটা থেকে সাড়ে সাতটা নাগাদ মদ খেয়ে আচমকাই সেই বাড়িতে ঢুকে পড়ে অমল। ঢুকে তাঁর ও তাঁর ভাইয়ের নামে চিৎকার করে গালিগালাজ করতে থাকে। তখন দীপালি তার প্রতিবাদ করেন। এলাকার লোকের লোকের অভিযোগ, প্রতিবাদ করার পরেই ওই যুবক দীপালির হাত ধরে টানাটানি করতে শুরু করে। চিৎকার করতে থাকেন দীপালি। ধস্তাধস্তিও হয় ওই মত্ত যুবকের সঙ্গে। এই অবস্থায় দীপালিকে সজোরে ধাক্কা মারে অমল। ইটের উপরে আছড়ে পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই অজ্ঞান হয়ে যান। পরিবার সূত্রে জানা গেছে দীপালি উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিলেন। দেখতে না পেলেও শব্দ শুনে সব বুঝতে পারছিলেন দীপালির ভাই। দ্রুত তিনি প্রাক্তন কাউন্সিলর পিন্টু নাগকে ফোন করেন। ঘটনার কথা জানিয়ে তাড়াতাড়ি ফিরে আসতে বলেন খোকনকে। পিন্টু নাগের থেকে নম্বর নিয়ে শ্রীরামপুর থানার আইসিকে ফোন করেন। পিন্টু নাগ নিজেও থানায় ফোন করে ঘটনার কথা জানিয়ে দীপালিদের বাড়িতে হাজির হয়ে যান। পুলিশও দ্রুত ঘটনাস্থলে চলে আসে। শ্রীরামপুর থানার পুলিশ দীপালিকে হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান বহুক্ষণ আগেই মৃত্যু হয়েছে দীপালির। আজ ময়নাতদন্তের পরে পরিবারের হাতে দেহ তুলে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার স্বামী। পিন্টু নাগ বলেন, “আমরা জানতে পেরেই ফোন করি থানায়। আমরা নিজেরাও যাই। তখন ওই মহিলাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।” অত্যন্ত মদ পান করায় ওই যুবক ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল। সে উঠতেও পারেনি। পুলিশ প্রথমে তাকে থানায় নিয়ে যায়। তারপরে তার স্ত্রীকে খবর দিয়ে অভিযুক্তকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। এলাকা সূত্রে খবর, অমল সমাদ্দার নিয়মিত ভাবে মদ খেয়ে এলাকার মহিলাদের উত্ত্যক্ত করে এবং চিৎকার ও গালিগালাজ করে। তার বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করবে বলে জানা গেছে।