শেষ আপডেট: 28th May 2020 17:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো বা কোনও নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের কাছে কোনও সুপারিশ পাঠায়নি বলে বৃহস্পতিবার রাতে পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিল নবান্ন। এদিন রাতে একটি টুইট বার্তায় সরকারের তরফে বলা হয়, এ ব্যাপারে যে ভুয়ো ও বিভ্রান্তিকর গুজব ছড়ানো হচ্ছে তা ঠিক নয়।
চতুর্থ দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ৩১ মে রবিবার। তার পর লকডাউনের মেয়াদ আরও বাড়বে কিনা সে বিষয়ে সবার মনেই কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজ্যগুলির মতামত জানতে বৃহস্পতিবার ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা সব রাজ্যে মুখ্য সচিবের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন। তার পর রটে যায় যে রাজ্য সরকারও কনটেইনমেন্ট জোনের বিধি নিষেধ নিয়ে কিছু সুপারিশ কেন্দ্রকে দিয়েছে। কেউ বা বলতে শুরু করে লকডাউনের মেয়াদ আরও দু’সপ্তাহ বাড়ানোর কথা বলেছে নবান্ন।
এই পরিস্থিতিতেই রাতে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র দফতর। তাতে বলা হয়েছে, মুখ্য সচিব কোনও কোথাও এ ধরনের কথা বলেননি।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, রাজ্য সরকারের শীর্ষ নেতৃত্ব বা আমলারাও হয়তো চান লকডাউনের মেয়াদ বাড়ুক এবং চলাফেরা, পরিবহণ, দোকান বাজার খোলার ক্ষেত্রে কিছু নিষেধাজ্ঞা বা নিয়ন্ত্রণ থাকুক। নইলে কোভিডের সংক্রমণ আরও ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবে। কিন্তু তাঁরা এও চান, সেই পদক্ষেপ কেন্দ্র জানাক। কারণ, এর রাজনৈতিক দায় রাজ্য সরকার নিতে চায় না।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, সেই কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক প্রেস কনফারেন্স ও ভিডিও কনফারেন্সে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে শোনা গিয়েছে—‘কেন্দ্র লকডাউন করেছে’, বা কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমনকি ইদের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গেও তিনি বলেছিলেন, কেন্দ্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা নিইনি।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, রাজ্যে লকডাউনের শর্ত ঠিকমতো মানা হচ্ছে না বলে এর আগে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল যখন তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, তখন কিন্তু তার পাল্টা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, এই অভিযোগ ঠিক নয়। কেন্দ্রের তিন দিন আগে রাজ্য লকডাউন ঘোষণা করেছে।
তবে সে সব এক মাস আগের কথা। তার পর তিন দফায় লকডাউনের মেয়াদ বেড়েছে। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, মুখ্যমন্ত্রী হয়তো বুঝতে পারছেন লকডাউন বা এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক মানুষের জীবিকা নিয়ে সংকট তৈরি হচ্ছে। তাঁদের মনে অসন্তোষও তৈরি হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই দায় সরকারের উপরেই এসে পড়বে। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে রাজ্য সরকারকে বিচ্ছিন্ন রাখতে চাইছেন তিনি। যাতে লকডাউনের জন্য বা তা নিয়ে কোনও সমস্যার জন্য রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দায় কেন্দ্রের ঘাড়েই চাপে।