শেষ আপডেট: 4th July 2020 08:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শাস্তির খাঁড়া মাথার উপরে ঝুলতেই শুরু হয়ে গেছে উমফানের টাকা ফেরানো। এবার টাকা ফেরালেন হিঙ্গলগঞ্জের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শহিদুল্লাহ এবং কর্মাধ্যক্ষ স্বরূপ প্রামাণিক। উমফানে ক্ষতিপূরণের টাকা বণ্টনের অভিযোগ ও বিক্ষোভ এমন পর্যায়ে চলে যায় যে দলীয় কর্মীদের চেতাবনি দেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। দুর্নীতি দেখলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৃণমূল দলীয় ভাবে নির্দেশ দেয় জেলা পরিষদের সভাপতিদের। পঞ্চায়েত প্রধান-সহ বেশ কয়েক জন জনপ্রতিনিধিকে পদত্যাগ করতে হয়। তারপরেই জায়গায় জায়গায় টাকা ফেরানো শুরু হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকে উমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দা সাবিরা বিবি ও মোশারফ গাজি বলেন, “হিঙ্গলগঞ্জে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শহিদুল্লাহ, কর্মাধ্যক্ষ স্বরূপ প্রামাণিক সহ মোট পাঁচ জন পঞ্চায়েত সদস্য নিজেদের নাম ও পদ ব্যবহার করে কুড়ি হাজার টাকা করে তুলে নিয়েছেন। সেই টাকা তাঁদের অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে।” তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের টাকা পাচ্ছেন না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষের অভিযোগ, যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের না দিয়ে দোতলা ও একতলা বাড়ির বহু লোককে দলের পক্ষ থেকে টাকা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হিঙ্গলগঞ্জের ব্লক তৃণমূল সভাপতি শহিদুল্লাহ গাজি। তিনি বলেন, “আমাদের তৃণমূলের দলের একটা অংশ চক্রান্ত করে আমাদের নাম ঢুকিয়ে দিয়েছে। আমরা পরে গিয়ে দেখি ব্যাঙ্কে টাকা ঢুকে গেছে। আমফানের ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা তা ফেরত দিয়ে দিয়েছি।” ইতিমধ্যেই ব্লক সভাপতি, কর্মাধ্যক্ষ সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও সৌম্য ঘোষ, জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেছেন শহিদুল্লাহ। তিনি বলেন, “তৃণমূল দলের একটা অংশ আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্তে নেমেছে। পাশাপাশি দলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছে।” উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের শিক্ষা, পরিবহণ ও তথ্য-সংস্কৃতি দফরের কর্মাধ্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজি বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন। যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে এবং তিনি ঠিক বলছেন কিনা তা বিচার করে দেখা হবে।” তৃণমূলের প্রভাবশালীরা এই টাকা ফেরত দিতে শুরু করায় উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরবন অঞ্চলের বাসিন্দারা অবাক।