শেষ আপডেট: 26th July 2020 05:42
জলপাইগুড়িতে সংক্রমণ বেড়েছে দ্বিগুণ, পরিস্থিতি মোকাবিলায় অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরুর সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য দফতরের
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: রাজ্যের সঙ্গে জলপাইগুড়িতেও বেড়ে চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত ১০ দিনে এই জেলায় আক্রান্ত বেড়েছে দ্বিগুণ। মৃত্যু বেড়েছে তিনগুণ। চলতি মাসে এখানে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। আর তাই তা মোকাবিলা করতে তৈরি হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। এই নিয়ে ইতিমধ্যে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে তারা। শুরু হচ্ছে অ্যান্টিজেন টেস্ট। করোনা সংক্রমণ রুখতে দরকার দ্রুত নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া। আর তাই অ্যান্টিজেন টেস্ট শুরু হতে চলেছে এই জেলায়। রবিবার চলে আসছে কিট। আগামী সপ্তাহের শুরু থেকেই এই পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। এর ফলে মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়া যাবে। ফলে চিকিৎসাও দ্রুত শুরু করা যাবে বলেই বক্তব্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের। আগে ছবিটা অন্য রকম ছিল। রোগীর সোয়াব নিয়ে পাঠানো হত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে ১০ দিন সময় লেগে যেত। ফলে রিপোর্ট আসার আগেই সংক্রমণ অনেকটা ছড়িয়ে পড়ছিল। এরপরে ট্রুন্যাট মেশিন বসে জেলায়। ফলে কিছুটা চাপ কমে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের উপর। কিন্তু এখনও রিপোর্ট আসতে অন্তত দু’দিন সময় লাগছেই। এর মধেই সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী ১৫ জুলাই জলপাইগুড়িতে মোট আক্রান্ত ছিল ৬৩৪ জন। মৃত্যু হয়েছিল ৩ জনের। কোভিড হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন মোট ৪০৬ জন। চিকিৎসাধীন ছিলেন ২২৫ জন। এর ১০ দিন পরে ২৪ জুলাই এই জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১০৭২ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। কোভিড হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা পেয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন মোট ৬৪৯ জন। চিকিৎসাধীন আছেন ৪১৪ জন। জলপাইগুড়িতে করোনা সংক্রমণ রোধে ইতিমধ্যেই কোভিড হাসপাতাল, সেফ হোম ও হোম আইসোলেশন, এই তিন রকমের পদ্ধতি নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস বা সারি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতালে উন্নীত করে এবং আরও একটি সেফ হোম তৈরি করে আগামী সপ্তাহের শুরুতেই শুধুমাত্র করোনা রোগীদের জন্য বেডের সংখ্যা ১৫০ থেকে বাড়িয়ে ৫৫০ করে ফেলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলার অফিসার অন ডিউটি সুশান্ত রায় জানিয়েছেন, আমরা বৈঠক করে করোনা মোকাবিলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা এই জেলায় অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা করেছি। রবিবারের মধ্যে কিট এসে যাচ্ছে। আগামী সপ্তাহের শুরু থেকেই এই পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। এর ফলে দিনে অন্তত ১০০ জনকে ৩০ মিনিটের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব হবে। ফলে কেউ আক্রান্ত হলে তাকে দ্রুত আইসোলেশনে পাঠিয়ে চিকিৎসা শুরু করে দিতে পারব। ফলে সংক্রমণের হার কমবে। সুশান্তবাবু আরও জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রচার করে জলপাইগুড়ি বাসীকে জানানো হচ্ছে, কেউ অসুস্থ বোধ করলে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আসবেন। তাঁকে দেখে ডাক্তারবাবুর সন্দেহ হলে তাঁকে সারি হাসপাতালে পাঠানো হবে। তারপর তাঁর অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হবে। যদি কারও রিপোর্ট নেগেটিভ আসে তাহলে ফের ট্রুন্যাট মেশিনে তাঁর পরীক্ষা হবে। কারণ অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় কেবল পজিটিভ রিপোর্টকেই মান্যতা দেওয়া হয়। আর রিপোর্ট পজিটিভ এলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় লালারস সংগ্রহের জন্য কিয়স্ক বসানো হবে। এই কাজে জেলার বাসিন্দাদের সাহায্য চেয়েছেন তিনি।