দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুলিশ স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ পেতেই পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় দুষ্কৃতী ও তোলাবাজদের দাপট কমেছে বলে মনে করছেন দেকানিরা। সাধারণ বাসিন্দারাও তাঁদের সঙ্গে একমত। গত দু’দিনে পুলিশের ভূমিকায় খুশি পুরো জেলা। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দেশজুড়ে লকডাউন শুরু হতেই পুলিশের অন্য রূপ দেখছেন জেলার লোকজন।
তাঁরা মনে করছেন যে পুলিশকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়ায় অনেক সমাজবিরোধী ও দুষ্কৃতী শাস্তি পাচ্ছে। অনেক তোলাবাজ ও মদ্যপদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন বহু দোকানদার ও এলাকার বাসিন্দারা। সমস্যার কথা বারবার জানিয়েও লাভ হচ্ছে না বলে আগে বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠলেও এখন পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই কাজ করছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট, মারিশদা, কাঁথি ও দিঘা থানার পুলিশকে কড়া হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে দেখে এইসব এলাকার লোকজন খুশি। তাঁরা বলছেন যে ক’দিন আগেও যেখানে পুলিশকে বারবার ফোন করেও পাওয়া যেত না এখন সেই পুলিশই আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তৎপর। এখন লকডাউনের ফলে পুলিশ কাউকে চিনছে না। এলাকার লোকজন বলছেন, “আমি অমুক দাদার লোক তমুক দাদার লোক বললেই জুটছে বেধড়ক লাঠির ঘা। ভয়ে আর তারা কারও নাম মুখে আনছে না। এখন দলমত নির্বিশেষ কাজ করছে পুলিশ।”
কোলাঘাটে কয়েকটি ফলের দোকান ও সব্জির দোকান খোলা ছিল বুধবার। বিক্রিবাটাও ভাল হচ্ছে দেখে বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী মদ খেয়ে সেখানে হাজির হয়ে দৌরাত্ম্য শুরু করে। অকথ্য ভাষায় কথা বলতে শুরু করে। ক্রেতারা ভয়ে পিছিয়ে যান। কয়েকজন দোকানি পুলিশকে খবর দেন। তখনই পুলিশ এসে তাদের বেধড়ক পেটায়। এখন আর কোনও দাদার ফোনাফুনি কাজে লাগছে না। ওই জায়গা থেকে পুলিশ সাত জন মত্ত যুবককে আটক করেছে। লাঠিচার্জ করে ফাঁকা করে দেয় গোটা এলাকা। এর ফলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই খুশি হয়েছেন।
মারিশদাতেও বেশ কয়েকটি এলাকায় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব চলছিল। পুলিশের বেধড়ক মার খেয়ে তারাও এখন হাজতে ঢুকেছে। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া থাকার জন্য পুলিশ যাদের টিকিও ছুঁতে পারত না সুযোগ বুঝে এখন পুলিশও নিজের কাজ করছে।
অবশ্যই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোখার জন্য দেশজোড়া লকডাউনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে জেলার পুলিশ।
কাঁথি ও দিঘাতেও পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপ করতে দেখা গেছে। নিয়ম ভাঙলেই পুলিশ কঠোর হয়েছে। অধিকাংশ মানুষই এখানে ঘরবন্দি রয়েছেন। সমাজবিরোধী বলে পরিচিত যেসব লোক দুষ্কর্ম করতে বের হচ্ছে পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করছে। যেসব মদের দোকান এদিন খোলা ছিল সেইসব দোকানের মালিককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। কয়েক জন দোকানি পুলিশের কথা না শুনে হম্বিতম্বি করায় তাদের কপালে জুটেছে বেধড়ক মার। মদের বোতলও ভেঙে দিয়েছে পুলিশ।