শেষ আপডেট: 1st July 2020 08:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দুর্গাপুজোয় এবার আড়ম্বরের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। তা বলে নিয়মরক্ষা থেমে নেই কোথাও। ইছামতির পাড়ে বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদের রামেশ্বরপুরের ঘোষ বাড়িতেও পড়ে গেল পুজোর ঢাকে কাঠি। রীতি মেনে রথের দিন কাটা হয়েছে কাঠামোর কাঠ। উল্টোরথের দিন হয়েছে কাঠামোপুজো। ঘোষবাড়ির লোক এই পুজোকে বলেন মঙ্গলযাত্রা। বসিরহাটে ভারত ও বাংলাদেশকে আলাদা করেছে ইছামতি নদী। সেখানে রামেশ্বরপুর গ্রাম। এই গ্রামের পুজো ঠিক কতটা পুরোনো তা নিয়ে ধন্ধ রয়েছে। এলাকার লোকজন বলেন তিনশো বছরের পুরনো এই পুজো। তবে ঘোষ পরিবারের সদস্য নির্মল ঘোষ বলেছেন এই পুজো দুশো বছরের বেশি পুরনো। এক সময় এই পুজোর টানে ইছামতি পেরিয়ে অনেকে আসতেন। দেশ ভাগের অনেক পরেও সেই রীতি বজায় থেকেছে। এখন অবশ্য ওপার বাংলা থেকে এই পুজোয় আসার উপায় নেই। ঘোষবাড়ির ঠাকুরদালানে মঙ্গলবার উল্টোরথের দিন কাঠামো পুজোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী এই পুজোর সূচনা। নির্মল ঘোষ জানান, এই প্রাচীন পুজোমণ্ডপে সিনেমার শুটিং করা হয়েছিল। বিখ্যাত পরিচালক তরুণ মজুমদারের ‘নিমন্ত্রণ’ ছবির শুটিং হয়েছিল তাঁদের ঠাকুরদালানে। অভিনয় করেছিলেন সন্ধ্যা রায়। তিনি বলেন, “আমাদের এই পুজো অনেক পুরনো। দুশো বছর পার হয়ে গেছে। হাসনাবাদের রামেশ্বরপুর এলাকার এটাই সেরা পুজো। গদাঘর ঘোষ নামে আমাদেরই এক পূর্বপুরুষ পুজো চালু করেন। তারপর থেকে নিয়ম করে তা হয়ে আসছে। রথের দিন কাঠামোর কাঠ কাটা হয়।” মূল ঠাকুরদালানের পাশাপাশি এখানে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের মন্দির, তুলসীমন্দির-সহ কয়েকটি মন্দির। রীতি মেনে এখানে পুজো শুরু হয় উল্টোরথের দিন। প্রতিষ্ঠা করা হয় ঘট। দুর্গাপুজোর বোধন পর্যন্ত প্রতিদিন নিয়ম করে ঘট পুজো করা হবে। এই ঘটকে ঘোষ পরিবারের লোকজন বলেন মঙ্গলঘট। কাঠামোর গায়ে মাটির প্রলেপ দেওয়ার কাজও শুরু হয় উল্টোরথের দিনই। তা দেখতে এক সময় অনেক দূর থেকে মানুষ এখানে আসতেন। ভিড় জমে যেত এলাকায়। স্থানীয় গ্রামবাসীরা তো আসতেনই। তবে এবছর করোনার জন্য নানা বিধিনিষেধ রয়েছে। তাই লোকে আসতে পারেননি। তবে নিয়মরক্ষায় কোনও বিঘ্ন ঘটেনি। ইছামতিতে দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জনও এক সময় রীতিতে পরিণত হয়েছিল যদিও এখন আর তা করা সম্ভব হয় না। তবে বহু পুরনো বাড়িতে পুজো হয়ে আসছে সেই একই ভাবে।