দ্য ওয়াল ব্যুরো: বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা নবান্ন থেকে বেরনোর সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন, মঙ্গলবার ভোরে বায়ুসেনা বালাকোটে যে স্ট্রাইক করেছিল তাতে কত জঙ্গি মারা গিয়েছে? আদৌ কোনও জঙ্গি মারা গিয়েছে কি না। মমতার সেই প্রশ্ন রাজনৈতিক শিবিরে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। শুক্রবার সকালে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাল্টা তোপ দাগলেন মমতার বিরুদ্ধে। সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দিলীবাবু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রশ্ন তুলছেন, সেই প্রশ্ন তোলার হিম্মত পাকিস্তানেরও হয়নি।”
খড়্গপুরের বিধায়কের কথায়, “ওই দিন সকালেই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রক ছবি দেখিয়ে মেনে নিয়েছিল অ্যাটাক হয়েছে।” দিলীপবাবু আরও বলেন, “ওই জায়গায় রিপোর্টারদের যেতে দেওয়া হয়নি। লাশ সরানোর জন্য ঘিরে ফেলা হয়েছিল গোটা এলাকা। কেউ কেউ বলেছেন, ওখানে ব্যাপক বৃষ্টি হচ্ছিল। তাই সব ধুয়ে গিয়েছে।” দিলীপ ঘোষ আক্রমণের মাত্রা আরও চড়িয়ে বলেন, “বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন ।“
পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ ই মহম্মদের জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। এ কথা সাংবাদিক বৈঠক করে সে কথা জানিয়েছিলেন, বিদেশ সচিব বিজয় গোখলে। তার পর থেকে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, বিমান হানায় প্রায় সাড়ে তিনশো জইশ জঙ্গিকে খতম করেছে ভারতীয় বায়ু সেনা। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা মমতা এ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছিলেন। তিনি বলেন, "এতো জঙ্গিকে মারা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, কই কোনও ছবি তো দেখলাম না। দেশের মানুষ তো প্রশ্ন তুলছে।" মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমি নিউইয়র্ক টাইমসের একটা খবর পড়েছি। ওয়াশিংটন পোস্ট, রয়টার্সের খবরও পড়েছি। এরা কেউ বলছে, বিমান হানায় কেউ মারা যায়নি, কেউ বলছে একজন মারা গেছে। তা হলে তিনশ, সাড়ে তিনশ সংখ্যাটা কীসের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে?”
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধে বেলা তিন বাহিনীর তরফে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয় নয়াদিল্লিতে। সেখানে বলা হয়, সেনার হাতে অকাট্যপ্রমাণ রয়েছে জইশ শিবির গুঁড়িয়ে দেওয়ার। কতজন মারা গিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন করা অবিবেচকের মতো কাজ হবে। পাকিস্তানের দাবি উড়িয়ে নয়াদিল্লির তরফে এও বলা হয় , যে পাকিস্তান ভারতের আকাশসীমায় ঢুকে সেনা ক্যাম্প আক্রমণ করতে এসেছিল। কিন্তু ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী তা রুখে দেয়। আর পাক সেনা সেই হানায় ব্যাবহার করেছিল এফ-১৬ বিমান। বুধবার পাকিস্তান আর্মির মেজর জেনারেল আসিফ গফুর দাবি করেছিলেন, পাকিস্তান নাকি এফ-১৬ ব্যবহারই করেনি। ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী সাংবাদিক বৈঠকে মিসাইলের ভাঙা টুকরো দেখিয়ে দেন প্রমাণ হিসেবে। যা কিনা শুধুমাত্র এফ-১৬ থেকেই ছোড়া যায়।