শেষ আপডেট: 5th August 2020 07:01
বাঁকুড়ার রুক্ষ মাটিতে আপেল চাষে সাফল্য, পরের ধাপে বাণিজ্যিক উৎপাদনের ভাবনা
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রুক্ষ, শুষ্ক ও লাল মাটির দেশ বাঁকুড়ায় উৎপাদিত হচ্ছে আপেল। কথাটা শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। সৌজন্যে ‘পরশমণি’ নামে একটি সংস্থা। ওই সংস্থার নিজস্ব ফার্মে উৎপাদন শুরু হয়েছে ‘গ্রিন অ্যাপেল’-এর। নানা ধরনের বীজ বৈচিত্র, জৈব চাষ, গোখাদ্য ও আম উৎপাদনে ইতিমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে বাঙালি প্রতিষ্ঠান ‘পরশমণি’।
বাঁকুড়ায় নিজস্ব কৃষি খামারে সবুজ আপেল উৎপাদন করে নজির গড়তে চলেছে তারা। পরশমণি থেকে জানানো হয়েছে, কয়েক বছর আগে সুরাটের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফার্মার সিস্টেম রিসার্চের সঙ্গে যোগাযোগ করে ২৫ টি ‘আন্না’ ও ‘ডেজার্ট গোল্ডেন’ প্রজাতির আপেলের চারা আনা হয়। পরীক্ষামূলক ভাবে এই গাছ তাদের নিজস্ব কৃষি খামারে লাগানো হয়। পরবর্তী সময়ে ঐ গাছ থেকে ফল উৎপাদন শুরু হয়। উৎপাদিত আপেলের স্বাদ যথেষ্ট ভাল বলেই তারা দাবি করেছে। পরশমণি বাঁকুড়ার তরফে সিদ্ধার্থ সেন এ বিষয়ে বলেন, “বাঁকুড়ার মাটিতে আপেল চাষ এখনও গবেষণার পর্যায়ে আছে। বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু হতে এখনও মোটামুটি দু’বছর সময় লাগবে।” কারণ প্রাথমিক পর্যায়ে এই প্রকল্প সাফল্যের মুখ দেখলেও বাঁকুড়ার জলবায়ুতে উৎপাদন, স্বাদ ও বাজারে চাহিদা কেমন রয়েছে সেই বিষয়গুলি এখন দেখতে হবে বলে তিনি জানান।
বাঁকুড়া জেলার মাটি কাঁকরে ভরা। লাল মাঁকড় পাথরে ভরা মাটির জল ধারণের ক্ষমতাও কম। এই জেলায় জলের অভাবও রয়েছে। তাই জেলার অধিকাংশ জায়গাই এক ফসলী। এই জায়গার কৃষকদের এখন তাই বাগিচা চাষে উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সম্প্রতি তালডাংরায় বাণিজ্যিক ভাবে আঙুরের উৎপাদন শুরু হয়েছে। টানা আট বছর ধরে গবেষণায় সাফল্য এসেছে। তার আগে জেলায় মুসম্বি লেবু চাষে সাফল্য এসেছে।
বাঁকুড়া জেলার আম এখন ভাল ভাবেই বাজার দখল করে নিয়েছে। আগে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের আমের প্রায় একচেটিয়া বাজার ছিল এ রাজ্যে। এখন ছোট ছোট বাগিচা করে এই জেলাতেও বাণিজ্যিক ভাবে আম উৎপাদনে সাফল্য এসেছে।
গবেষকরা মনে করছেন, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আম, আঙুর এবং মুসম্বি লেবুর পরে আগামী দিনে এই জেলায় বাণিজ্যিক ভাবে আপেল চাষেও সাফল্য আসবে। নদিয়ার হাঁসখালিতে বাড়ির টবে আপেল ফলিয়েছেন এক ব্যক্তি। তবে সেটা একেবারেই শখ করে।