শেষ আপডেট: 24th August 2020 12:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঘূর্ণিঝড় উমফানের প্রবল তাণ্ডবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভেঙেছে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার বাঁধ। নবান্নের নির্দেশের পরে সেই বাঁধ নতুন করে মেরামতির কাজ শুরু করেছিল দুই জেলার প্রশাসন। কিন্তু সেই নতুন তৈরি করা বাঁধও অনেক জায়গায় ভেঙে পড়ছে বলে অভিযোগ। বাঁধ পুরো মেরামত করা হয়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে অনেক জায়গায়। আর এই সব অভিযোগ উঠতেই দুই ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসনকে ভর্ৎসনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভার্চুয়াল প্রশাসনিক সভা থেকে দুই জেলার প্রশাসনের উপর ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি। এদিন নবান্নে ভার্চুয়াল বৈঠকে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক কর্তাকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, উমফানের পর যে বাঁধ তৈরি হচ্ছিল, তা অনেক জায়গায় ভেঙে যাচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি। জেলাশাসক ও এসপিদের আমি বলব, যখন বাঁধ সারানো হচ্ছিল, তখন কি ঠিকভাবে তদারকি করা হয়নি? তাহলে কি তাড়াহুড়ো করে সঠিক গুরুত্ব দেওয়া হয়নি? উমফানের ক্ষতিপূরণের যে কাজ বাকি রয়েছে তা তাড়াতাড়ি পূর্ণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।এমনিতেই উমফানের এই ত্রাণ ঘিরে কম দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেনি শাসকদলের বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রীকে পর্যন্ত স্বীকার করতে হয়েছে কিছু জায়গায় সমস্যা হয়েছে। অনেক জায়গাতেই নতুন করে ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ত্রাণ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়া ঝাড়খণ্ড ও ডিভিসি জল ছাড়লে তার জেরে হাওড়া ও হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা প্রতি বছর বন্যার কবলে পড়ে। বর্তমানে বিভিন্ন রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই বিষয়ে নজর রাখার জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জল ছাড়ার আগে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর এই ক্ষোভ যে ভিত্তিহীন নয়, তার একাধিক প্রমাণ রয়েছে। যেমন, দক্ষিণ সুন্দরবনের সাতটি ব্লকে বাঁধ না হওয়ায় নদীর নোনা জল ঢুকে নষ্ট করছে চাষের জমি। একটু বৃষ্টি বেশি হলে ভেসে যাচ্ছে বসতবাড়িও। সাগর ব্লকের গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহিষমারি গ্রামে চার হাজার মানুষের বাস। ঘূর্ণিঝড়ের সময় গোটা এলাকার বাঁধ ভেঙে পড়েছিল। তারপরে নতুন করে বাঁধ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু যতটা হওয়ার কথা ছিল ততটা হয়নি। লাইট হাউস থেকে বাঁধ হওয়ার কথা ছিল মহিষমারির হাতিপিটিয়া পর্যন্ত। কিন্তু হয়েছে বেগুয়াখালি পর্যন্ত মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার। বাকি এলাকায় এখনও বাঁধ নেই। স্থানীয় এলাকাবাসীর বক্তব্য, অনেকবার স্থানীয় প্রশাসনকে আবেদন করেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাঁরা এসে বাঁধ তদারক করে গিয়েছেন। কিন্তু তারপর কাজ একটুও এগোয়নি। এই নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। সেই ক্ষোভের কথা নিশ্চয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও পৌঁছেছে। তাই এদিন এই কথা বলেছেন তিনি।