শেষ আপডেট: 28th February 2019 09:56
কোচবিহারের তৃণমূলে ধাক্কা! নিশীথের নেতৃত্বে বিজেপি-র পথে পঞ্চায়েতে নির্বাচিত কয়েকশো সদস্য
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোচবিহারের তৃণমূলে বড় ভাঙন। সৌজন্যে সদ্য বহিষ্কৃত দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূলের যুব নেতা নিশীথ প্রামাণিক। কয়েকশো নেতাকর্মী নিয়ে দিল্লি পৌঁছেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সন্ধে বেলাই যোগ দেবেন গেরুয়া শিবিরে। এবং এই সবটাই হতে চলেছে মুকুল রায়ের হাত ধরে। একদা তৃণমূলের সেকেন্ডম্যান তথা অধুনা বিজেপি নেতা মুকুলবাবুর দাবি, “পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরের প্রায় ৩০০ নির্বাচিত সদস্য যোগ দেবেন বিজেপি-তে।” তাঁর কথায়, এত বড় যোগদান আগে কখনও বাংলার রাজনীতিতে হয়নি। সব মিলিয়ে চারশো শাসক দলের নেতাকর্মী এ দিন বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ক’মাস আগেও কোচবিহারের তৃণমূলে শেষ কথা ছিলেন নিশীথ। বছর তিরিশের সুদর্শন এই নেতা দলের ভিতরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। শুধু যুব তৃণমূলের নেতা ছিলেন তা নয়, নিশীথ একই সঙ্গে ছিলেন মাদারের ‘মাথা ব্যথা।’ অনেকের মতে, কোচবিহারে মাদার-যুবর সংঘর্ষে নিশীথই ছিলেন মূল কাণ্ডারী। দিনহাটা ব্লক থেকে তাঁর উত্থান হলেও, যত সময় গড়িয়েছে গোটা জেলায় আধিপত্য তৈরি করেছিলেন নিশীথ। কোচবিহার জেলায় দলের কোন্দল নিয়ে একাধিকবার হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে গিয়ে প্রকাশ্যে নেতাদের ধমকও দিয়েছিলেন। কিন্তু দিদির কোনও ওষুধেই কাজ হয়নি উত্তর বাংলার এই জেলায়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা কোচবিহারের তৃণমূল জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিধানসভা কেন্দ্র নাটাবাড়িতে, তাঁকেই কোণঠাসা করে দিয়েছিলেন তিরিশের কোঠার এই নেতা। একাধিকবার দলের নেতারা অভিযোগ জানিয়েছিলেন নিশীথের বিরুদ্ধে, কিন্তু তাঁর ফর্ম থেকে তাঁকে সরানো যায়নি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর বোর্ড গঠন প্রক্রিয়ায় একের পর এক গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে মাদারের লোকজনকে গো হারা হারিয়ে সভাপতি হয়েছিলেন যুব নেতারা। তৃণমূল সূত্রের মতে, এ সবই ছিল নিশীথের ম্যাজিক। জেলার যুব সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হয়েও তাঁর কনভয় দেখলে মনে হতো ভারতের রাষ্ট্রপতি যাচ্ছেন। সঙ্গে একাধিক নিরাপত্তারক্ষী। কয়েকমাস আগে কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে চোখ ধাঁধানো গণেশ পুজোও করেছিলেন নিশীথ। বলিউড, টলিউড তারকাদের নিয়ে এসে প্রায় কোটি টাকা খরচ করেছিলেন সিদ্ধিদাতার আরাধনায়। শেষ পর্যন্ত গোটা ব্যাপারটা হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে গত ৮ ডিসেম্বর নিশীথকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। এ বার সেই সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী নেতাকে নিজেদের দিকে টেনে নিলেন মুকুল রায়। পর্যবেক্ষকদের মতে, যে সংখ্যায় পঞ্চায়েত সদস্যরা যোগ দিচ্ছেন বলে মুকুলবাবু দাবি করেছেন তা যদি সত্যি হয়, তাহলে কোচবিহারের বেশ কয়েকটি ব্লকে তৃণমূলের হিসেব ওলটপালট হয়ে যাবে। কোচবিহারে একটি লোকসভা আসন রয়েছে। ছোট জেলা হওয়ায় বেশ কিছু সুবিধেও রয়েছে। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, লোকসভা ভোটেও প্রভাব পড়বে এর। যদিও নিশীথের সঙ্গে পঞ্চায়েতে নির্বাচিত কয়েকশ সদস্যের বিজেপি-তে যাওয়ার জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর কথায়, “তৃণমূলের কেউ যায়নি। বিজেপি একটা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া