শেষ আপডেট: 20th June 2020 12:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এক টানা ৮৮ দিন বন্ধ থাকার পরে শনিবার পুরোদমে খুলে গেল ঘোজাডাঙা স্থলবন্দর। এর ফলে এই স্থলসীমান্ত দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন করে বাণিজ্য শুরু হয়ে গেল। লকডাউনের জেরে এবং করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ২৩ মার্চ অন্য স্থলবন্দরের পাশাপাশি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর ঘোজাডাঙাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিগত কয়েক দিন ধরে প্রশাসনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করে কয়েকটি বিধিনিষেধ মেনে সীমান্ত বাণিজ্য চালু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বাণিজ্য শুরু করার অনুমতি দিয়ে ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরে চিঠি দিয়েছেন। এরপরে শনিবার কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতরের অনুমতির ভিত্তিতে চালু হয়েছে সীমান্ত বাণিজ্য। ঘোজাডাঙা সি অ্যান্ড এফ সূত্রের খবর, প্রথম দিন পঁচিশটি ট্রাক পণ্য নিয়ে ওপারে যাবে। জানা গেছে দীর্ঘ দু’মাসের বেশি সময় ধরে সীমান্তে পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকগুলির পণ্য পঁচিশ জুনের মধ্যে বাংলাদেশে পাঠাতে হবে। সতর্কতা হিসেবে প্রত্যেক লরি চালককে পিপিই পরতে হবে। বাংলাদেশ সীমান্তের ভিতরে ২০০ মিটার পর্যন্ত ট্রাকগুলি যাবে। পণ্য খালাসের পরেই সেগুলিকে ফিরিয়ে আনা হবে। এজন্য ৭০ জন চালকের একটি পুল করতে বলা হয়েছে। তাঁরাই জিরো পয়েন্ট থেকে ট্রাক নিয়ে বাংলাদেশে যাবেন ও ট্রাক নিয়ে ফেরত আনবেন। তাঁরা বাইরের কোনও লোকের সংস্পর্শে আসতে পারবেন না। প্রতিটি ট্রাককে স্যানিটাইজ করে তবে ভারতের ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। ভারত বাংলাদেশের মধ্যে আটটি স্থলবন্দর দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য হয়। তার মধ্যে সাতটি বন্দর আগে চালু হলেও ঘোজাডাঙা সীমান্ত খোলা নিয়ে সমস্যা জট পাকাচ্ছিল। রফতানিকারীদের সংগঠন ঘোজাডাঙা সি অ্যান্ড এফ অ্যাসোসিয়েশন জেলাশাসকের পাশাপাশি নবান্নকে লেখা এক চিঠিতে স্থলবন্দর দিয়ে অবিলম্বে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চালুর ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপের আবেদন করেছিল। রফতানিকারীরা চিঠিতে তাদের দুর্দশার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, “পণ্য ঠিক মতো সরবরাহ করতে না পারার জন্য বাংলাদেশের আমদানিকারীরা অর্ডার বাতিল করে দিচ্ছিলেন। যার জেরে তাঁদের সমূহ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। শুল্ক দফতর সূত্রে খবর, ঘোজাডাঙায় পণ্য রফতানির অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার ট্রাক। পেট্রাপোলের পর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সীমান্ত বাণিজ্য হয় ঘোজাডাঙা দিয়েই। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের হিসাব অনুযায়ী প্রতি বছর ১৬ হাজার কোটি টাকার আমদানি-রফতানি হয় ঘোজাডাঙা স্থলবন্দরের মাধ্যমে। সরাসরি অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ এবং পরোক্ষ ভাবে সব মিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষ নির্ভরশীল এই স্থলবন্দরের উপরে। তাই এই বন্দর চালু হওয়ায় খুশির হাওয়া বাণিজ্য মহলে।