শেষ আপডেট: 24th June 2020 11:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: উমফানে ত্রাণ বিলি নিয়ে যখন দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত শাসকদল, যখন একাধিক জায়গায় দলের জনপ্রতিনিধিকে পদত্যাগ করতে হয়েছে তখন অন্য ছবি দেখা গেল উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জে। শাসকদল নয়, এখানে তিরিশ থেকে পঁয়তিরিশটি গ্রামে ত্রাণ বিতরণ করে আসছেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। ঘুর্ণীঝড় উমফানে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভা অঞ্চলের বহু গ্রাম। এউই সব গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দাকে নিয়মিত ভাবে শুকনো খাবার দিয়ে আসছেন পুলিশকর্মীরা। তাঁরা নিজেরা রান্না করে ভাত ডাল মাছ ও সবজি-সহ সুষম খাবার নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন গ্রামে পরিবেশন করে আসছেন। শুধু তাই নয়, এই সময় যে সব রোগের প্রকোপ বেশ হয় সেই সব রোগের ওষুও তাঁরা বিতরণ করছেন। এ ব্যাপারে আগে তাঁরা ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ করে নিয়েছেন। করোনা এখন মহামারীর আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থায় তাঁরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মাস্ক বিতরণ করছেন। স্যানিটাইটাজার বিলি করছেন। নদীর নোনা জলে যাঁদের পোশাক নষ্ট হয়ে গেছে তাঁদের জন্য নতুন জামাকাপড়ও দিয়েছেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। এই কাজে পুলিশকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এলাকার বেশ কয়েক জন যুবক। তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য পুলিশকর্মী ও ওইসব যুবকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন এলাকার লোকজন। আজ বুধবার পশ্চিম ঘূনী পুলপাড়া এলাকায় গিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করেন তাঁরা। এলাকা বাসিন্দারা জানিয়েছেন, উমফানের পরে একমাস কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত তাঁরা কোনও ত্রাণ পাননি। ত্রাণ পাওয়ার ক্ষেত্রে ভীষণ ভাবেই প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। সরকারি ভাবে কিছু না পাওয়ায় সাধারণ মানুষ ক্ষোভ উগরে দিলেন এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তিদের উপরে। স্থানীয় বাসিন্দা রবিন কয়াল বলেন, “আমাদের যাতায়াতের একমাত্র রাস্তার মুখে কাঠের গুঁড়ি ফেলে আটকে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কলকাতা থেকে যাঁরা ত্রাণ সামগ্রী দিতে আসছেন তাঁরা আর আসতে পারছেন না।” হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভা এলাকার শতাধিক যুবক এদিন ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে এলাকায় এসে তা বিলি করেন। এ মাসের ৩ জুন বিডিওর কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বিজেপি অভিযোগ করেছিল, উমফানে যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত তাঁরা ত্রাণ পাচ্ছেন না। যদিও সেই অভিযোগ তখন এক কথায় খারিজ করে দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। বিডিও আশ্বাস দিয়েছিলেন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার। এক মাস পরে দেখা গেল যাঁরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত এখনও তাঁরা রয়েছেন সেই তিমিরেই। হিঙ্গলগঞ্জের বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, “ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরে ত্রাণ বিলি করা হয়েছে। ত্রাণ নিয়ে যদি কারও অভিযোগ থাকে তাঁরা সরাসরি পঞ্চায়েত কিংবা বিডিওর কাছে লিখিত আবেদন করতে পারেন। সারা বছর বিরোধীদের অনেক অভিযোগ থাকে। সমালোচনা ও বিরোধিতা না করে গঠনমূলক আলোচনা ও সহযোগিতা করলে এই সমস্যা আর হয় না।”