শেষ আপডেট: 13th September 2021 06:17
দ্য ওয়াল ব্যুরোঃ জোটেনি বার্ধক্যভাতা। আবাস যোজনার পাকা ঘরও মেলেনি। দুয়ারে সরকারে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য আবেদন করলেও তাও অধরা। তাই চাঁচল (Chanchal) শহর লাগোয়া আমলাপাড়ার বৃদ্ধ দম্পতি এখন আক্ষরিক অর্থেই অসহায়। এদিকে ঢিলছোড়া দূরত্বেই পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি। অভিযোগ, নানাভাবে আবেদন জানিয়েও সাড়া মেলেনি। ষাটোর্ধ্ব গৌর দাস একসময় ভ্যান-রিকশা চালাতেন। এখন চোখে দেখতে পান না। এক ছেলে মারা গিয়েছেন। আরেক ছেলে দূরে থাকেন। কোনওরকমে অসুস্থ স্ত্রী গয়া দাসকে নিয়েই ভাঙাচোরা ঘরে পড়ে থাকেন বৃদ্ধ। যদিও তাঁকে খাইয়ে দেন স্ত্রীই। পোশাকও পরিয়ে দেন। রেশনের চাল যা জোটে তাই দিয়েই দুটো নুন-ভাত খেয়ে দিন কাটে দম্পতির। রোজগার করার মত কর্মক্ষমতা তাঁদের কারওই আর নেই। তাই সরকারি সাহায্য না পেলে শেষ বয়সে এসে তিলে তিলে মৃত্যুর পথে এগিয়ে চলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। সেই পরিণতির কথা ভেবেই আতঙ্কে মরেন দুজনে। ব্লক প্রশাসনের কাছেও লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন ওই দম্পতি। জানানো হয়েছে এলাকার বিধায়ককেও। তবে আজও কেউ পাশে দাঁড়াননি। গয়াদেবীর অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্যার দাবি মতো ২০ হাজার টাকা দিতে পারেননি বলেই সরকারি ঘর মেলেনি। যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা পম্পা চৌধুরী সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আবেদনের পদ্ধতিতে ভুল ছিল। আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকলেও উনি পঞ্চায়েতে নথি জমা দেননি বলেই ঘর পাননি।’ চাঁচলের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষ জানান, তাঁর কাছে অভিযোগ এসেছে। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। এদিকে চাঁচল-১ ব্লকের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্যও দম্পতির পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তাঁদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড যাতে হয়, ভাতা মেলে এবং আবাস যোজনার পাকা ঘরের বন্দোবস্ত হয় তার দায়িত্ব নেবেন বলেও জানান তিনি। প্রশাসনের আশ্বাস পেয়ে শেষমেশ কিছুটা স্বস্তিতে গৌর দাস এবং গয়া দেবী। তবে যতক্ষণ না তাঁদের যন্ত্রণার অবসান হয়, ভাঙা ঘরে পরস্পরের জীর্ণ হাতে হাত রেখেই বয়ে যাবে জীবন।