শেষ আপডেট: 20th January 2022 06:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঘরে ঘরে এখন সর্দি-কাশি, জ্বর। কারও নাক বন্ধ, তো কারও ঘণ্টায় ঘণ্টায় কান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নাক দিয়ে জল পড়া, হাঁচি, কাশিতে অতীষ্ট। জ্বর একবার সেরে গেলেও কিছুদিন পরে ফের হাল্কা গা ম্যাজম্যাজে ভাব। কাঁপুনি দিচ্ছে অনেকের। ক্লান্তি সারা শরীরজুড়ে। এখন সর্দি বা জ্বর হলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে কোভিড। চিকিৎসকরা বার বার বলছেন, ভাইরাল জ্বরও হানা দিয়েছে এই মরসুমে। কাজেই করোনা নাকি ভাইরাল জ্বর নাকি সাধারণ ফ্লু, সেটা পরীক্ষা করালেই ধরা পড়বে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) আবার কিছুদিন আগেই নিদান দিয়েছে, হাল্কা বা মাঝারি কিছু উপসর্গ যেমন সর্দি-কাশি, জ্বর, মাথাব্যথা, গায়ে ব্যথা ইত্যাদি থাকলে করোনা পরীক্ষা করানোর দরকার নেই। টেস্ট তাঁরাই করাবেন যাঁদের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস আছে, কোমর্বিডিটি আছে বা দিনকয়েক ধরে টানা জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের সংক্রমণের মতো লক্ষণ ধরা পড়ছে। এখন সাধারণ মানুষের প্রশ্ন পরীক্ষা না করালে কোভিড নাকি সাধারণ জ্বর বোঝা যাবে কী করে। আর যদি ওমিক্রন হয় তারও বা উপসর্গ কী। কীভাবে সতর্ক থাকা যাবে। ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট চিকিৎসকরা বলছেন, ওমিক্রন সংক্রমণের ১৪টি উপসর্গ দেখা যাচ্ছে রোগীদের। এইসব লক্ষণ যদি দেখা দিতে থাকে তাহলে বুঝতে হবে ওমিক্রন হানা দিয়েছে শরীরে। তখন কোভিড টেস্ট করিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খাওয়াই ভাল। কী কী সেই উপসর্গ? ১) নাক বন্ধ, নাক দিয়ে জল পড়ছে প্রায় ৭৩ শতাংশ রোগীর। ২) টানা হাঁচি হচ্ছে ৬০ শতাংশের। ৩) প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা হচ্ছে প্রায় ৬৮ শতাংশের। জ্বরের সঙ্গেই মাথা ব্যথা শুরু হচ্ছে। ৪) প্রচণ্ড ক্লান্তি, সারা শরীরে ব্যথা হচ্ছে ৬৪ শতাংশ ক্ষেত্রে। জ্বর সেরে গেলেও ক্লান্তি যাচ্ছে না। ৫) গলা ব্যথা, গলা খুসখুসের মতো সমস্যা হচ্ছে ৬০ শতাংশের। ৬) ঘন ঘন কাশি, জ্বর সারলেও শুকনো কাশি থেকে যাচ্ছে ৪৪ শতাংশের। ৭) গলা ভেঙে যাচ্ছে ৩৬ শতাংশ রোগীর। গলার স্বর বদলে যাচ্ছে। ৮) কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসছে অনেকের। ৩০ শতাংশ রোগীর কাঁপুনি হচ্ছে, তারপর শরীরের তাপমাত্রা বাড়ছে। ৯) জ্বর হচ্ছে ২৯ শতাংশের। ১০) মাথা ঝিমঝিম, মাথার দু'দিকে ব্যথা হচ্ছে ২৮ শতাংশ ক্ষেত্রে। ১১) মস্তিষ্কে ধোঁয়াশা, মাথা ঘোরার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে ২৪ শতাংশের। ১২) ২৩ শতাংশ রোগীর পেশীতে ব্যথা হচ্ছে। পেশির টান অনুভব করছেন অনেকে। ১৩) নাকের গন্ধ চলে যাচ্ছে খুব ক্ষেত্রেই। ডেল্টায় যেমন স্বাদ-গন্ধ হাপিশ হচ্ছে, ওমিক্রনে মাত্র ১৯ শতাংশ রোগীর গন্ধ চলে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। ১৪) বুকে ব্যথা হচ্ছে ১৯ শতাংশ ক্ষেত্রে। কেন্দ্রের নয়া গাইডলাইনে বলা হয়েছে, করোনা রোগীদের তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে--মৃদু, মাঝারি ও সিভিয়ার বা গুরুতর। হাল্কা জ্বর-কাশির লক্ষণ থাকলে তা মৃদু সংক্রমণ, সেক্ষেত্রে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। ডাক্তারকে জিজ্ঞেস না করে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া ঠিক হবে না। শ্বাসপ্রশ্বাসের মাত্রা মিনিটে ২৪ এর কম বা সমান, অক্সিজেনের মাত্রা ৯০-৯৩ শতাংশ, শ্বাসের সমস্যা না থাকলে সংক্রমণ মাঝারি বলে ধরে নিতে হবে। এই রোগীরা নিয়মিত প্রোনিং করতে পারেন। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে মিথাইলপ্রেডনিসোলোন ০.৫ থেকে ১ মিলিগ্রাম/ কেজি খাওয়া যেতে পারে। ৫-১০ দিন ডেক্সামিথাসোন খাওয়া যেতে পারে। অক্সিজেন সাপ্লিমেন্টের দরকার নেই। সিভিয়ার কেস হলে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৩ শতাংশের কম হবে। বেশি জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট থাকলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। পাঁচ দিনের বেশি এমন উপসর্গ থাকলে আইসিইউতে রেফার করতে পারেন চিকিৎসকরা। পড়ুন দ্য ওয়ালের সাহিত্য পত্রিকা 'সুখপাঠ'