শেষ আপডেট: 23rd June 2020 02:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মায়ের সঙ্গে এক যুবকের প্রেম ছিল বলে মেয়েটির অভিযোগ। এও অভিযোগ, সেই প্রেমিক মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এলে তাঁর সঙ্গেও অসভ্যতা করত, শ্লীলতাহানির চেষ্টা করত। একদিন মায়ের প্ররোচনাতেই তাকে ধর্ষণ করে ওই যুবক। তার পর আরও একদিন। তার পর আরও একদিন। সেই মেয়ে নাবালিকা। কিন্তু উত্তর চব্বিশ পরগনার হাড়োয়ার সেই নাবালিকা মেয়েটি সেই নির্যাতন চেপে রেখে শুধু ডুকরে কাঁদেনি। বরং চোয়াল শক্ত করেছে। তারপর বাবাকে সঙ্গে নিয়ে সটান থানায় গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে, তার মা ও মায়ের প্রেমিকের বিরুদ্ধে। সোমবার ওই মহিলা এবং তার প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার ভয়বহতায় বিস্মিত পুলিশ কর্তারাও। এমনও মা হতে পারে! উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হাড়োয়া থানা এলাকার মল্লিকভেড়ি ঘাটপাড়ার বাসিন্দা সত্যানন্দ মণ্ডল কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। সেটাকেই সুযোগ হিসাবে কাজে লাগিয়ে বিশু অধিকারী নামে প্রতিবেশী এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলেন তাঁর স্ত্রী মিলন। সত্যানন্দের একমাত্র মেয়ের বয়স বছর ষোলো। এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরে সে প্রতিবাদ করে। পরে গোপনে মা ও তাঁর প্রেমিকের একান্ত মুহূর্তের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে রাখে। তাঁর বাবা এলে সেই ছবি তাঁকে দেখায় ওই কিশোরী। তখন ওই যুবককে বাড়িতে আসতে নিষেধ করে দেন সত্যানন্দ। তিনি কর্মস্থলে ফিরে গেলে তাঁর স্ত্রী মিলন ওই যুবককে ফের ডেকে পাঠান। তখন ওই নাবালিকা তার তীব্র প্রতিবাদ করে। অভিযোগ, এর পরে তাঁর মায়ের প্ররোচনাতে তাকে যৌন হেনস্থা করে বিশু। পরে তাকে একাধিক বার সে ধর্ষণও করে। অত্যাচারিত ওই নাবালিকা এই ঘটনার কথা তাঁর বাবাকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে তাকে প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয় অভিযুক্ত। বেশ কয়েক বার যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হওয়ায় তা প্রথমে দিশাহীন হয়ে পড়েছিল ওই কিশোরী। তারপর বাবা ফিরলে তাঁকে নিয়ে সোজা হাড়োয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে হাড়োয়া থানার পুলিশ তার মা মিলন মণ্ডল ও মায়ের প্রেমিক বিশু অধিকারীকে গ্রেফতার করেছে। দুই অভিযুক্তকে সোমবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয়েছে। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা চালু করেছে। ইতিমধ্যেই ধৃতদের একপ্রস্থ জেরা করেছে হাড়োয়া থানার পুলিশ। নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষা করা হচ্ছে। মায়ের প্ররোচনায় নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের কথা জানাজানি হতেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার লোকজন। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার লোকজন অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।