শেষ আপডেট: 24th September 2023 03:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো, মালদহ: উপস্থিত বুদ্ধি আর সাহসিকতার জোরে ক্লাস সেভেনের ছোট্ট মোরসেলিম শেখ (Morselim Sheikh) এখন মালদহের (Maldah) হরিশ্চন্দ্রপুরের হিরো বনে গিয়েছে। শিয়ালদহ থেকে শিলচরগামী আপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে (Kanchenjunga Express) বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচিয়েছে সে। যা নিয়ে রেলকর্তারা তো বটেই, এলাকাতেও তাকে নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে।
পরে এই নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মোরসেলিমের সাহসিকতাকে আমার কুর্নিশ। তাকে আমরা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মালা পরিয়ে বরণ করে মিষ্টি মুখ করিয়েছি। ওর পড়াশোনার জন্য আগামীদিনে সরকারের তরফে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। রাজ্য সরকার এই বাচ্চা ছেলেটির পাশে রয়েছে। আর আমি রেল কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করব, আপনারাও বাচ্চাটিকে সাহায্য করবেন।” এদিকে এই প্রসঙ্গে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, ‘রেল লাইনে সমস্যার কথা আমাদের নজরে এসেছে। আমরা তড়িঘড়ি তা ঠিক করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’
শুক্রবার দুপুর তখন সাড়ে তিনটে হবে। শিলচরগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস তখন প্রবল বেগে ছুটছে। কিন্তু সুপারফাস্ট এই ট্রেনের যাত্রী থেকে শুরু করে চালক কিংবা গার্ড কেউই জানতেন না, সামনে কত বড় বিপদ অপেক্ষা করে রয়েছে। ট্রেন তখন মালদহের ভালুকা রোড স্টেশন পেরোচ্ছে। সেই সময় ওখান দিয়েই বাড়ি ফিরছিল মোরসেলিম। হঠাৎ তার চোখ পড়ে ওই ট্রেন লাইনে। দেখতে পায়, যে লাইনে ট্রেন আসছে, সেই লাইনেরই নীচে মাটি সরে গিয়ে বিশাল এক গর্ত তৈরি হয়ে গেছে। ছোট্ট মোরসেলিম বুঝে যায়, সামনে কত বড় বিপদ ঘটতে চলেছে।
এরপর সেদিন কী ঘটেছে, তা শনিবার মোরসালেম নিজে মুখে জানিয়েছে। সে বলে, ‘আমি মাছ ধরতে রেললাইনের ধারে গিয়েছিলাম। তখন দেখি যে লাইনে আপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস আসছিল, সেই রেললাইনের নীচে বড় গর্ত দেখি। সঙ্গে সঙ্গে বিপদ বুঝে গায়ের লাল টি-শার্ট খুলে নাড়তে থাকি। বিপদ বুঝতে পেরে ট্রেন দাঁড়িয়ে যায়। তারপর নেমে এসে তাঁরা সবাই লাইনটি খতিয়ে দেখেন। এরপর ট্রেনের চালক আমাকে পিঠ চাপড়ে দেন।’ এদিকে ছেলের এমন সাহসিকতায় মুগ্ধ মোরসেলিমের বাবাও। বর্তমানে তিনি গুজরাতে রয়েছেন। সেখানেই পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন তিনি। বলেন, ছেলে ভাল করে পড়াশোনা করে বড় মানুষ হয়ে উঠুক, এই কামনা করছেন।
লাইনে গর্ত, দেখেই গায়ের লাল গেঞ্জি উড়িয়ে দৌড় ৮ বছরের ছেলের! কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস রক্ষা পেল