শেষ আপডেট: 31st March 2020 13:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত চব্বিশ ঘণ্টায় পশ্চিমবঙ্গে এক লক্ষের বেশি মানুষকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হল। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবন যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে তাতেই এই তথ্য রয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনের প্রকাশিত বুলেটিনে অবশ্য কোয়ারেন্টাইন শব্দটি লেখা নেই। বলা হয়েছে, গত চব্বিশ ঘন্টায় হোম সার্ভিলেন্স তথা গৃহ নজরে রাখা হয়েছে আরও ১,০৩,৩৯১ জনকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টির অর্থ একই। এমনিতেই লক ডাউন চলছে। বাড়ির বাইরে বেরোতে বারবার নিষেধ করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এঁদের বলা হচ্ছে, আপাতত চোদ্দ দিন তাঁরা যেন একেবারেই বাড়ির বাইরে না বেরোন। তাঁদের বাড়িতে রেখে সরকার তাঁদের উপর নজরও রাখবে। দেখা হবে, তাঁদের শরীরে কোনও সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা দিচ্ছে কিনা। সে রকম হলে তখন তাঁদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হবে। স্বাস্থ্য ভবনের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে আরও ৮৭ জনকে। সেইসঙ্গে ৫২ জনের রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া গিয়েছে পাঁচ জনের। সোমবার রাতে হাওড়ার হাসপাতালে যে রোগীর মৃত্যু হয়েছে তাঁর শরীরের নমুনা পরীক্ষা করেও পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে সরকারি হিসেবে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। ইতিবাচক বিষয় এটাই, যে তিন জনকে সুস্থ হিসেবে ঘোষণা করে বাড়িও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি ২১ জনের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা অবশ্য ভাল না। তাঁদের রেসপিরেটরি সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনের এ দিনের বুলেটিনে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৩৮ জনকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। গৃহ নজরে রাখা হয়েছে মোট ১,৪৭,৭৭৭ জনকে। কেন এত জনকে গৃহ নজরে রাখার প্রয়োজন হল তার কারণও ঘরোয়া ভাবে ব্যাখ্যা করছেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। তাঁদের কথায়, এই যে ২৭ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে, এঁরা প্রত্যেকেই কম বেশি বহু মানুষের সংস্পর্শে এসেছেন। যেমন উত্তরবঙ্গের মহিলা বা হাওড়ার যে মহিলার মৃত্যু হয়েছে এঁরা অনেকের সংস্পর্শে এসেছেন বলে আশঙ্কা। একই ভাবে ঢাকুরিয়ায় বেসরকারি হাসপাতালে যিনি ভর্তি রয়েছেন, তিনিও প্রচুর মানুষের সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে সন্দেহ। তা ছাড়া ভিন্ রাজ্য থেকে যাঁরা এসেছেন তাঁদের নিয়েও চিন্তা রয়েছে। হতেই পারে এঁদের মধ্যে কারও শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। তাই চোদ্দ দিন গৃহ নজরে থাকলে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যাবে কারও শরীরে আদৌ সংক্রমণ ঘটেছে কি ঘটেনি। যদি সংক্রমণ কারও শরীরে ছড়িয়েও থাকে, তাহলেও তাঁর থেকে নতুন কারও শরীরে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকবে না। অর্থাৎ সংক্রমণ ছড়ানোর শৃঙ্খল ভাঙা যাবে।