শেষ আপডেট: 1st September 2022 13:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহামেডান স্পোর্টিং (Mohammedan Sporting Club) কি শুধু মুসলমানদের ক্লাব? সুরজিৎ সেনগুপ্ত, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়রা যেবার সাদা-কালো জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন সেবার কলকাতা ফুটবল (Kolkata Football) জেনে গিয়েছিল, এ খেলার ধর্ম হয় না।
মোহনবাগান বা ইস্টবেঙ্গল কি কেবল হিন্দুদের ক্লাব? গত রবিবার মোহনবাগান গ্যালারিতে বসা ডানকুনির মহম্মদ মারুফ আর ছেলে রাজ্জাককে সঙ্গে নিয়ে ইস্টবেঙ্গল গ্যালারিতে যাওয়া হাওড়া সালকিয়ার সেখ মেহবুব জানেন—ফুটবল একটা আলাদা ধর্ম।
বৃহস্পতিবার সোনালি রোদ মাখা রেড রোড দেখল আরও একটা ফ্রেম। যা কলকাতার ফুটবল ঐতিহ্য, এই শহরের সাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির গৌরবকে বোধহয় এগিয়ে দিল কয়েক দশক।
এদিন জোড়াসাঁকো থেকে রেড রোড পর্যন্ত পুজোর মিছিল হয়েছে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে। কলকাতার দুর্গাপুজোকে (Durga Puja 2022) আবহমান ঐতিহ্যের তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। এদিন ইউনেস্কোকে (UNESCO) ধন্যবাদ জানাতেই সমস্ত ক্লাবগুলোকে নিয়ে মিছিলের আহ্বান জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই মিছিলে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের পাশাপাশি হাঁটল মহামেডান স্পোর্টিংও।
মিছিল শেষে রেড রোডের অনুষ্ঠানে মোহনবাগানের দেবাশিস দত্ত, বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায়, ইস্টবেঙ্গলের নিতু সরকার, রূপক সাহাদের পাশাপাশি মহামেডান স্পোর্টিংয়ের কর্তারা ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দিলেন দুর্গা প্রতিমার অবয়ব। লাল-হলুদ, সবুজ-মেরু এবং সাদা-কালো—তিন ক্লাবের উত্তরীয় উঠল ইউনেস্কোর দুই প্রতিনিধিদের গলায়।
ফেজ টুপি পরা কামরুদ্দিন, দানিশ ইকবাল কিংবা পাঠান স্যুট পরা মহামেডান কর্তা মহম্মদ সোওরাব যখন সেই মূর্তিটি তুলে দিচ্ছেন ইউনেস্কোর দুই কর্তার হাতে, সেই ফ্রেমটি ছিল দেখার মতো।
অনেকের মতে, ধর্মীয় বিদ্বেষের আবহে খেলার মাঠও কলুষিত হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে এই ফ্রেম বাঁধিয়ে রাখার মতো। এই শহরই ইরান থেকে আসা মজিদ বাস্করকে বাদশা বানিয়েছিল। মজিদের বন্ধু জামশিদ নাসিরি কলকাতাকে ভালবেসে আর ফেরেননি। এই শহরই মহম্মদ হাবিবকে বুকে জড়িয়ে বলেছিল বড়ে মিঞা। ব্রাহ্মণের ছেলে সুরজিৎ সেনগুপ্ত আর প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে খিদিরপুরের মুসলমানরা গোল করার পর কাঁধে করে বের করেছিলেন কত ম্যাচে—বাইশের পয়লা সেপ্টেম্বর দেখাল, কলকাতা আছে কলকাতাতেই। নিজের মতো। আবার অনেকের মতে, এটা কলকাতা বলেই সম্ভব।