শেষ আপডেট: 14th October 2022 14:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সকালবেলা বজবজ বিধানসভার অন্তর্গত পূজালি থানার (Pujali police station) সামনে একেবারে হইহই কাণ্ড। প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে ছুরি নিয়ে (threaten for suicide) থানার সামনে ঠায় দু'ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকল প্রেমিক (lover)। পরে অবশ্য সেই প্রেমিককে ধরে থানার ভিতরে নিয়ে যায় পুলিশ। তবে সে সত্যিই ভালবাসার টানে ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল নাকি অন্য কোনও মতলব ছিল, তা এখনও জানা যায়নি।
সূত্রের খবর, আজ সকালে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে মেয়েকে নিয়ে পূজালি থানায় ঢুকেছিলেন সেই প্রেমিকার বাবা। এই কথা জানতে পেরেই থানার বাইরে চলে আসে প্রেমিক। এরপর সাড়ে এগারোটা থেকে টানা ২ ঘণ্টা ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে এক ছাউনির তলায়। সঙ্গে ছিল ধারাল ছুরি। সেটা আবার কখনও কখনও নিজের গলাতেও ধরে ভয় দেখায়। আর দাবি করে, একবার অন্তত প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে দিতেই হবে। সকালবেলা ওই দৃশ্য দেখতে পূজালি থানার সামনে রীতিমতো ভিড় জমে গিয়েছিল।
জানা গেছে, এই ঘটনার সূত্রপাত সপ্তাহ তিনেক আগে। স্থানীয় বিড়লাপুরের বাসিন্দা শেখ সোহেল (২২) তার প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। এদিকে, সেই প্রেমিকা এখনও নাবালিকা। অনেক খোঁজাখুঁজির পর দু'জনকেই বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। ছেলের বাড়ির লোকজন তাদের সম্পর্ক মেনে নিলেও মেয়ের বাবা-মা এখনও তা মানতে নারাজ। কারণ, তাঁদের মেয়ে এখন নাবালিকা। এই বিষয়ে প্রেমিকার বাবা-মা পূজালি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। আর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই শেখ সোহেল ও তার বাবাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে সেইসময় দু'জনেরই জেল হেফাজত হয়। পরে অবশ্য জামিনে ছাড়া পেয়ে যায় বাপ-ব্যাটা।
এদিকে, ওই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে আজ মেয়ের বাবা ও মেয়েকে ডেকে পাঠায় পূজালি থানার অফিসার। আর সেই খবরই কোনওভাবে সোহেলের কানে চলে যায়। তারপরই শুরু হয় আজকের নাটক। ছুরি হাতে থানার সামনে চলে আসে বেপরোয়া ওই প্রেমিক। সেই নাবালিকা ও তার বাবা যখন পুলিশের সঙ্গে থানার ভিতরে কথা বলছে তখন থানার গেটে দাঁড়িয়ে ক্রমাগত হুমকি দিতে থাকে সোহেল। দাবি জানায়, একবার অন্তত প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে দিতেই হবে। তা না হলে গলায় ছুরি চালিয়ে দেবে।
জাঙ্গিপাড়ার নাবালিকার মৃত্যুতে ডিএসপিকে কড়া ধমক জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানের
থানার সামনে এমন নাটকীয় কাণ্ডকারখানা দেখে অবাক হয়ে যায় পুলিশ। তাকে দেখতে আশেপাশের লোকজনও ভিড় জমায় সেখানে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে মেয়ে ও মেয়ের বাবাকে কোনওরকমে সেখান থেকে বের করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এরপরেও বাগে আনা যাচ্ছিল না সোহেলকে। তার দাবি, প্রেমিকার সঙ্গে অন্তত একবার তাকে কথা বলিয়ে দিতেই হবে। টানা ২ ঘণ্টা ধরে এই জোরাজুরির পর অবশেষে সোহেলকে বাড়ি যেতে রাজি করানো হয়। এরপর সোহেল ছুরি পকেটে ঢুকিয়ে বাড়ি যাওয়ার জন্য বাইকে উঠতেই পেছন থেকে তাকে ধরে ফেলে দুই কনস্টেবল। কেন সে আজ এমন কাণ্ড ঘটালো, এরপর তা জানতে শুরু হয় জেরা।