শেষ আপডেট: 22nd October 2024 14:31
দ্য ওয়াল ব্য়ুরো, জলপাইগুড়ি: জঙ্গলে ঘেরা ডুয়ার্স। সেখানেই রয়েছে এক কালীতীর্থ। গরুমারা কিংবা রামসাই এলে সেখানে একবার ঘুরে যেতে পারেন। এই তীর্থস্থান ঘিরে রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস।
জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি রোড ধরে কিছুটা এগোলেই রয়েছে দোমহনী কাঠালবাড়ি গ্রাম। সেই গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কলাখাওয়া নদী। স্রোতোস্বিনী কলাখাওয়ার তীরে অবস্থিত দেবীর মন্দির। এখানে দেবীকে "পেটাকাটি মাতা" নামে চেনেন অনেকে। লোকমুখে প্রচলিত রয়েছে, মাটি খুঁড়তে গিয়ে কষ্টি পাথরের দেবী মূর্তিটি পেয়েছিলেন গ্রামের মানুষ। সেখানে কোদাল লেগে পেট কাটা গিয়েছিল দেবীর। এর থেকে দেবীর নাম হয় পেটকাটি।
দেবীর উচ্চতা প্রায় সাড়ে চার ফুট। দেবীকে কালী রূপেই পূজিতা হলেও তিনি দশভূজা। তবে তিনটি হাত ভাঙা। বাঁ দিকের একটি ও ডান দিকের দুটি হাত ভাঙা। পদ্মে আসীন। বাঁ দিকে রয়েছে হাতি, ছিন্ন নরমুণ্ড, নরমূর্তি। ডানদিকে রয়েছে হাতির মুখের অংশ, মানুষের কঙ্কাল, বাদ্য ঘণ্টা। ভাঙা নাক ও উদরে একটি বড় গর্ত রয়েছে। সেখান থেকে ফুঁড়ে বেরিয়ে থাকে কাঁকড়া বিছে। মূর্তিটির মাথার উপরে দুই দিকে রয়েছে হাতির লম্বা শুঁড়। গলায় রয়েছে নরমুণ্ডমালা। দেবী সর্পালঙ্কারে ভূষিতা। দেবীর পায়ের নীচে নারী মূর্তি, একদিকে শেয়াল, অপরদিকে রয়েছে পেঁচা।
দেবী এমন রূপ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মতান্তর রয়েছে। কেউ বলেন, দেবী চণ্ডী। কারও দাবি, দেবীরূপ বৌদ্ধ তন্ত্রের দেবী বজ্রযানীর সঙ্গে মিল রয়েছে। এক সময়ে এই এলাকা ছিল বৌদ্ধ তন্ত্রসাধকদের পীঠস্থান। বহু বৌদ্ধ সন্ন্যাসী মোক্ষলাভের জন্য এই এলাকায় তন্ত্রসাধনা করতেন। মূলত তিব্বত, নেপাল থেকে এখানে আসতেন সাধকরা। তাই স্থানীয়রা মনে করেন, সেই সময় থেকে এখানে দেবী বজ্রযানীর মূর্তিটি রয়েছে।
কালীপুজোর দিন এই মূর্তিকে ধুমাচণ্ডী হিসাবে পুজো করা হয়। সেই সময়ে ডুয়ার্সে এই কালীতীর্থে অনেকেই ভিড় জমা। তবে সারা বছরই ভুটান, নেপাল থেকে দেবী দর্শনের আসেন পর্যটকরা।