শেষ আপডেট: 26th June 2023 15:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: ডাঁই হয়ে রয়েছে মৃতদেহ। একটির উপর আর একটি চেপেছে। তার উপর আর একটি, এভাবেই লাশের পাহাড় তৈরি হয়েছে। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের লাশ ঘরে (Jalpaiguri morgue) ২০১৮ সাল থেকে পড়ে রয়েছে একাধিক দেহ। মর্গে যতগুলি মৃতদেহ রাখার কথা তার থেকে পাঁচ গুণ বেশি রয়েছে।
যার ফলে গিজগিজ করছে ম্যাগট। ডাঁই করা লাশের স্তূপ থেকে ভেসে আসা দুর্গন্ধে টেকা দায়। অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি। সেখানে কাজ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে ময়না তদন্ত বন্ধ করে দিলেন চিকিৎসকেরা। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে ২৮টি মৃতদেহ রাখার জায়গা রয়েছে। কিন্তু সেখানে বর্তমানে রয়েছে ১৩০টি মৃতদেহ। ২০১৮ সাল থেকে পড়ে রয়েছে অনেক লাশ। সেইসব বেওয়ারিশ লাশের সদগতি করার জন্য পুলিশ ও পুর প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
এরকম পরিবেশে কাজ করতে গিয়ে নিজেরাই অসুস্থ হয়ে পড়বেন। ডোম থেকে মৃতের পরিবার সবার জন্যই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ভাস্কর ভট্টাচার্য ময়না তদন্ত বন্ধ করে দেন। যদিও ময়না তদন্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কারও কারও পরিবার চিন্তায় পড়েছে। এক মৃতের আত্মীয় সুরেশ লাকরা বলেন, “অনেকদিন পর আমাদের আত্মীয়ের মৃতদেহের খোঁজ মিলেছে। এখন ডাক্তারবাবুরা কাজ বন্ধ করে দিলেন।এখন আমরা কী করব বুঝতে পারছি না।”
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক ডাক্তার ভাস্বর ভট্টাচার্য টেলিফোনে জানান, “২০১৮ সাল থেকে মৃতদেহ মর্গে পরে থাকলেও ডিসপোজাল হয়নি। কর্তৃপক্ষকে বারবার জানালেও অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। দুর্গন্ধ এবং মৃতদেহের শরীরে জন্ম নেওয়া ম্যাগট পোকায় মর্গ ছেয়ে গিয়েছে। এমন পরিবেশে একপ্রকার বাধ্য হয়ে আমরা ময়না তদন্তের কাজ বন্ধ করলাম। মর্গ সাফাই হলেই ফের কাজ শুরু করা যাবে।”
এনিয়ে প্রশাসন কি কিছু ভাবছে? জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানিয়েছেন, তিনি পুলিশ ও পুরসভা কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছেন।