বুদ্ধবাবুর হাতে নিজের আঁকা ছবি তুলে দিচ্ছেন নব্যেন্দু
শেষ আপডেট: 8th August 2024 16:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো, জলপাইগুড়ি: ছবি আঁকতে খুব ভালবাসতো জলপাইগুড়ি ফণীন্দ্রদেব বিদ্যালয়ে ক্লাস নাইনের ছাত্রটি। মুখ্যমন্ত্রী নিজের শহরে আসছে শুনে খুব ইচ্ছে হয়েছিল নিজের আঁকা একটা ছবি তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার। কিন্তু অত কি সোজা! নিরাপত্তার ঘেরাটোপ। প্রোটোকল। সব ডিঙিয়ে কী করে যেন সত্যি হয়েছিল স্বপ্নটা। সেই মিনিট ছয়েক এখনও সযত্নে আগলে রাখেন জলপাইগুড়ি জেলা যুব কংগ্রেসের সহ-সভাপতি নব্যেন্দু মৌলিক।
বললেন, "মনে পড়ে যাচ্ছে ২০০৮ সালের ২৫ শে ডিসেম্বরের কথা। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি। খবর পেলাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জলপাইগুড়ি আসছেন। সেই সময় ছবি আঁকার একটা ঝোঁক ছিল আমার। ছবি এঁকে বেশ কয়েকবার পুরস্কারও পাই। মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য আসছেন জেনে ঠিক করে ফেলেছিলাম আমার আঁকা একটা ছবি তাঁকে উপহার দেব। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ছবি তো আঁকা হল কিন্তু দেওয়া? আদৌও কি তা মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দিতে পারব! পুলিশ তো যাকে বলে পত্রপাঠ খারিজ, সেটাই করল। জেলা সিপিএমের নেতৃত্বকে গিয়ে ধরল আমার পরিবারের লোকজন। তাঁরাও জানিয়ে দিলেন, সম্ভব নয়। তবে জলপাইগুড়ির সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি কোনওভাবে জানতে পারেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সঙ্গে সঙ্গেই তৎকালীন জেলাশাসক বন্দনা যাদব এবং পুলিশ সুপার মনোজ ভার্মাকে নির্দেশ দিলেন আমাকে তাঁর কাছে নিয়ে আসার।"
এদিকে তখন তো অতশত তাঁর জানার কথা নয়। বাড়িতে মন খারাপ করে বসেছিলেন। হঠাৎ শুনলেন সরকারি গাড়ি এসেছে পাড়ায় তাঁরই খোঁজে! তারপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল সার্কিট হাউসে বুদ্ধবাবুর কাছে। নবেন্দু বলেন, "ঘরে ঢুকে প্রথমেই পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলাম তাঁকে। নিজের হাতে আঁকা ছবি তুলে দিলাম ওঁর হাতে। জানতে চাইলেন- 'কী নাম? কোন স্কুলে পড়ো? ছবিটি আঁকতে কতদিন সময় লেগেছে?' প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দিলাম। তিনি বললেন 'বেস্ট অফ লাক। জীবনে অনেক বড় মানুষ হও।"
মাত্র ছয় মিনিটের সাক্ষাৎ। সেই স্মৃতি এখনও টাটকা। পরবর্তীতে ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারী হয়েছেন নব্যেন্দু। কিন্তু অটুট রয়েছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধা। তাঁর প্রয়াণের খবর শোনার পর বারেবারেই ফিরে যাচ্ছিলেন কৈশোরের দিনগুলিতে।