শেষ আপডেট: 13th November 2021 10:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার (Post Poll Violence) তদন্তে পুজোর আগে তীব্র গতিতে এগোচ্ছিল সিবিআই। এলাকায় এলাকায় পৌঁছে যাওয়া, এফআইআর দায়ের, ধরপাকড়—সে হইহই কাণ্ড। যা দেখে বিজেপি বলছিল, এবার টের পাবে তৃণমূল। তবে পুজোর পরই যেন ব্রেক কষেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। শামুক গতির চেয়েও শ্লথ তদন্তের গতিবেগ। এমনকি সেই ঢিলেমি নিয়ে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে বঙ্গ বিজেপি। আগে রোজ যে ভাবে দিলীপ ঘোষ, শমীক ভট্টাচার্য, শুভেন্দু অধিকারীরা এ নিয়ে আক্রমণাত্মক মেজাজে কথা বলতেন, সেসবও কেমন যেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখন ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্যের ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত? হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছিল ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায়। তাতে ভাগ করে দিয়েছিল আদালত। খুন, ধর্ষণের মতো গুরুতর ঘটনার তদন্তভার সিবিআইকে দিয়েছিল হাইকোর্ট। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছিল সিট অর্থাৎ বিশেষ তদনকারী দলের হাতে। এখনও পর্যন্ত ভোট পরবর্তী হিংসায় বড় ঘটনাগুলির ক্ষেত্রে মোট ৫০টি এফআইআর দায়ের করেছে সিবিআই। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছে ৩০ জন। অন্যদিকে সিট শুরুর দিকে তদন্তে সে ভাবে গা লাগায়নি। পরে আদালতের গুঁতোতেই নড়েচড়ে বসতে হয় তাদের। তবে পরে শুরু করেও এসআইটি যে পরিমাণ এফআইআর করেছে তা বেশ চোখে লাগার মতো। এখনও পর্যন্ত ছ’হাজার ৯০০টি এফআইআর দায়ের করেছে তারা। বাড়ি-ঘর লুঠপাট, ভাঙচুর, ঘর ছাড়া করার মতো ঘটনায় এফআইআর দায়ের করেছে সিট। অনেকের বক্তব্য, এই সংখ্যাটাই বলে দিচ্ছে, বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা কতটা ভয়াবহ ছিল। হাইকোর্ট যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল তার বিরোধিতা করে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য। তবে সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়নি। শুনানিও এখনও হয়নি। এরমধ্যেই আবার তদন্ত রিপোর্ট হাইকোর্টে জমা দিয়েছে সিবিআই এবং সিট। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের বেঞ্চ দুই সংস্থাকেই নির্দেশ দিয়েছে আরও স্পষ্ট করে রিপোর্ট দিতে হবে। তা জমা করতে হবে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে। আগামী ২৩ ডিসেম্বর এই মামলার শুনানি হবে হাইকোর্টে। কিন্তু সিবিআইয়ের এই শামুক গতি নিয়ে অনেকেই ভ্রু কুঁচকোচ্ছেন। যদিও বিজেপির নেতারা বলছেন, এখানে সুপ্রিম কোর্টের বিষয়টিও জুড়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সিও তাকিয়ে রয়েছে সেদিকে। শুনানিতে যদি হাইকোর্টের রায় বহাল না থাকে তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ করতে হবে। তবে গেরুয়া নেতাদেরও অনেকে ঘরোয়া আলোচনায় মেনে নিচ্ছেন, যেভাবে সিবিআই আদা-জল খেয়ে নেমেছিল সেই গতি এখন আর নেই। তারই রেশ পড়েছে বিজেপির প্রতিক্রিয়ায়, বলছেন ওই দলের নেতারা। সেই কারণে গেরুয়া শিবির চুপ হয়ে গেছে। পড়ুন দ্য ওয়ালের সাহিত্য পত্রিকা 'সুখপাঠ'