শেষ আপডেট: 22nd December 2020 06:30
কাঁথি কারও জমিদারি নয়, সৌগত-ফিরহাদের বক্তৃতার হাইলাইটস
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর খাসতালুকে শক্তি প্রদর্শনের কর্মসূচি নিয়েছিল তৃণমূল। বুধবার বিকেলে কাঁথি শহরে পদযাত্রার পর সমাবেশে বক্তৃতা করেন তৃণমূলের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায় ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
এক নজরে সৌগত রায় ও ফিরহাদ হাকিমের বক্তৃতার হাইলাইটস-
সৌগত রায়ের বক্তব্য-
- আমি ৪৪ বছর ধরে কাঁথি আসছি। আজ যে মিছিল হয়েছে তা কাঁথিতে সর্বকালের সর্ববৃহৎ মিছিল। কাঁথির লোক বলছেন, এমন মিছিল তাঁরা আগে দেখেননি।
- আজকের এই মিছিল প্রমাণ করে দিল, কাঁথি কোনও পরিবারের জমিদারি নয়। তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবাসেন।
- দিঘার সমুদ্র থেকে দু’চার বালতি জল তুললে যেমন সমুদ্রের জল কমে না। তেমন তৃণমূল দু’চার জন চলে গেলেও তৃণমূলের কিছু যায় আসে না।
- বামেদের ছুড়ে ফেলেছিল কৃষকরা। স্বেচ্ছাচারী মোদী সরকারকেও ছুড়ে ফেলবে কৃষ্ক আন্দোলন।
- পরিকল্পনা ছাড়া লকডাউন করে মানুষের জীবনে চরম যন্ত্রনা নামিয়ে এনেছে কেন্দ্রীয় সরকার। চার কোটি লোক কাজ হারিয়েছেন।
- দিল্লিতে কৃষক আন্দোলন হচ্ছে। আর তখন অমিত শাহ দিল্লিতে না থেকে হনুমানের মতো লাফিয়ে বাংলায় চলে আসছে। এখানে খাবলাচ্ছে, ওখানে খাবলাচ্ছে।
- রোজ এসে বলছে ২০০-র বেশি আসন পাবে। অমিত শাহ দিবা স্বপ্ন দেখছেন। আমরা তো চ্যালেঞ্জ করেই দিয়েছি, বিজেপি তিন অঙ্কে পৌঁছতে পারবে না।
- মোদী, অমিত শাহ যে আসুক, বিজেপির নেতাগুলো ধুপ ধুপ করে যতই লাফাক বাংলায় ওরা কিছু করতে পারবে না। বাংলার মাটি দুর্জয় ঘাঁটি।
- এতদিন গান্ধীর কথা বলে আজকে নাথুরাম গডসের পার্টিতে যোগ দান করেছেন।
- সতীশ সামন্তর কথা বলে শ্যামাপ্রসাদের দলে গিয়ে ভিড়েছে।
- জাতীয় আন্দোলনে যাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নেই সেই বিশ্বাসঘাতকদের দলে গিয়ে নাম লিখিয়েছে।
- বিবেকানন্দ বলতেন পেট খালি রেখে ধর্ম হয় না। ওরা খেতে না দিয়ে ধর্ম গেলাতে চাইছে
- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাত বার সাংসদ হয়েছেন, দুবার বিধায়ক হয়েছেন।
- মমতা যদি সেদিন নন্দীগ্রাম না যেতেন সারা ভারত জানত না।
- শেখ সুফিয়ানের মতো নেতারা নন্দীগ্রামের সেদিন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আমরা বাইরে থেকে এসেছিলাম। কোনও সরস্বতীর বরপুত্র এসে সুন্দর চেহার নিয়ে নেতৃত্ব দেননি।
- দিল্লি থেকে চেষ্টা হচ্ছে বাংলার বদনাম করার।
- পুঁজিপতিরা চায় না নিম্ন মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে নেতৃত্ব দিক
- জেপি নাড্ডার কনভয়ে ইট পড়েছে। না পড়লেই ভাল হতো। কিন্তু বিজেপি এমন ভাব করছে যেন ভারত-চিন যুদ্ধ হচ্ছে। কী না দুটো ইট পড়েছে!
- ওরা একটা মালকে পাঠিয়েছে কৈলাস বিজয়বর্গীয়। আগে ছোট বেলায় কবিতা শুনতাম, খোকা ঘুমালো পাড়া জুড়ালো বর্গী এল দেশে। সেই বর্গী এসেছে। আর কী নাম? কৈলাস। এসে বলছে কৈ লাশ? লাশ কই?
- বিজেপি কর্মীদের বলছে কই লাশ কোথায়? তাঁরা বলছেন আমাদের তো কেউ মারা যায়নি। তারপর বলা হচ্ছে মর্গের বেওয়ারিস লাশকে নিয়ে এসে বিজেপি কর্মী বলতে। যে গলায় দড়ি দিয়েছে তাকে বলছে বিজেপির শহীদ।
- বাইরের রাজ্য থেকে হনুমান গুলো এসে ধুপ ধুপ লাফিয়ে পড়ছে। তার মানে বাংলার নেতাদের উপর ভরসা নেই। দিলীপ ঘোষ ব্যর্থ।
দিলীপ ঘোষ মত্ত ষাঁড়ের মতো। হাঁটতে বেরিয়ে গুঁতিয়ে দিচ্ছে । বলছে তৃণমূলকের মারবে। আমি বলছি বাপের ব্যাটা হলে মারার চেষ্টা করো - অনেকে বলত শুভেন্দু বড় পালোয়ান। ওঁর থেকে তো অখিল বড় পালোয়ান। ২০০১-এ জিতেছিলেন রামনগর থেকে। কিন্তু শুভেন্দু ২০০১-এ হেরেছিলেন। ২০০৪-এর লোকসভায়ও হেরেছিলেন। ২০০৬-এ শিশিরদা কাঁথি দক্ষিণ আসন ওঁর জন্য ছেড়ে দিলেন তখন জিতলেন।
বিধানসভায় ওঁর সঙ্গে প্রথম পরিচয়। আমায় জিজ্ঞেস করত কী ভাবে রাজনীতি করবে, কী ভাবে বিধানসভায় প্রশ্ন করবে। - ২০০৯-এ সাংসদ হলেন। ২০১৪তে সাংসদ হলেন। তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন তোমায় নন্দীগ্রামে প্রার্থী করবে। ২০১৬-তে শহীদের মা ফিরোজা বিবিকে পাঁশকুড়ায় টিকিট দিয়ে শুভেন্দুকে নন্দীগ্রামে টিকিট দেওয়া হল। মন্ত্রী করে দুটো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক দেওয়া হল।
ওঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে বললেন, না অভিষেক তোমার বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই আপত্তি নেই। তারপর শুনছি বলছেন, তোলাবাজ ভাইপো হঠাও। - সিরাজদৌল্লা হারলেও তাঁর নাম সবাই মনে রেখেছে। মীরজাফরকে কেউ জায়গা দেয় না।
আমার সেই মুণির গল্প মনে পড়ছে। মুণির আশীর্বাদে একটা ইঁদুর থেকে বেড়াল, কুকুর, বাঘ হয়েছিল। তারপর বাঘ হয়ে মুণিকেই খেতে আসছিল। তখন মুণি বলেছিলেন, যা আবার তুই ইঁদুর হয়ে যা। মানুষ ওঁকে আবার বাঘ থেকে নেংটি ইঁদুর বানিয়ে দেবে।
ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য-
- শুভেন্দু চলে যাওয়ায় তৃণমূল কর্মীরা খুশি।
- কোলাঘাটে ঢোকার পর থেকেই মনে হচ্ছিল মুক্ত বাতাস বইছে।
- যারা এতদিন গান্ধীবাদ, সুভাষবাদ জিন্দাবাদ বলে এল তারা গিয়ে গান্ধী হত্যাকারীদের দলে ভিড়েছে।
- যারা কৃষকদের বেচে দিতে চাইছে তাদের দলে গিয়ে নাম লিখিয়েছেন।
- পরিবারতন্ত্রের কথা বলছেন? ২০০০ সালে নমিনেশন পেয়েছিলেন, ২০০১-এ পেয়েছিলেন, ২০০৮ এ নমিনেশন পেয়েছিলেন, কিসের জন্য পেয়েছিলেন? কোনও আন্দোলন করেছেন? শিশির অধিকারীর জন্য পেয়েছিলেন ।
- আন্দোলন করেছিল সুফিয়ানরা। তোমাকে ধরে নেতা করেছিল। তাঁদের সঙ্গে বেইমানি।
- আজ যা দেখলাম তাতে নিশ্চিত পূর্ব মেদিনীপুরের সব আসন তৃণমূল জিতবে।