পাশে মা পিসির কোলে ছোট্ট সিমরন
শেষ আপডেট: 13th December 2024 19:18
রিয়া দাস কোচবিহার
কন্যাসন্তান হওয়ায় ফুল দিয়ে সাজানো হল গাড়ি। করা হল শোভাযাত্রাও। সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে নিয়ে রীতিমতো উৎসবের মেজাজে বাড়ি ফিরলেন তুফানগঞ্জ -২ ব্লকের বক্সিরহাটের বাসিন্দা সাদ্দাম হোসেন। এলাকায় এই ধরনের ঘটনা প্রথম। তাই তার এই ভাবনাকে কুর্নিশ জানাল গ্রামবাসীরা।
সাদ্দাম হোসেন পেশায় গাড়ি চালক। সম্প্রতি বক্সিরহাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দুটি পুত্রের পর এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী জাহানারা। চারদিকে কন্যাসন্তানদের যখন এত লাঞ্ছনা তখন এই খবরে খুশির হাওয়া বইতে শুরু করে সাদ্দামের গোটা পরিবারে। এখনও যাঁরা কন্যা সন্তান জন্মানোর পর মনখারাপ করেন, তাঁদের সাদ্দাম আর জাহানারার এমন ভাবনা অন্য বার্তা দিল।
এখনও কন্যা সন্তান হলে মনে মনে ক্ষুন্ন হন এমন পরিবারের সংখ্যা নেহাতই কম নয়। কন্যা ভ্রুন হত্যা বা মেয়ে হওয়ায় মায়ের উপর অত্যাচার চালানোর ঘটনাও আকছার শোনা যায়। সেখানে এদিন মা সহ ফুটফুটে সদ্যোজাতকে ধুমধাম করে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে আসা হল। নবজাতককে বরণের জন্য এলাহি আয়োজন করে পরিবার। যে গাড়িতে করে বাড়ি গেল সদ্যোজাত, সেটাও সাজানো হল ফুল দিয়ে। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের করানো হয় মিষ্টি মুখ।
অসম সীমান্ত লাগোয়া বক্সিরহাট এলাকায় এমন ঘটনা এর আগে কেউ দেখেনি। পরিবারের বক্তব্য, পুত্র বা কন্যা বলে নয়। যারা এই ভেদাভেদ করে তারা ভুল করে। কন্যা সন্তান জন্ম হয়েছে তাই তাঁরা খুশি। তাই তাকে বাড়ি ফেরাতে এমন আয়োজন।
সদ্যোজাতর বাবা সাদ্দাম হোসেন বলেন, "অনেকে মেয়ে হলে ফেলে দিচ্ছে আবার অনেকে গর্ভের মধ্যেই হত্যা করছে। সেটা তো ঠিক নয়। ছেলে হলেও যেমন খুশি মেয়ে হলেও তেমন খুশি। আজকে প্রথম কন্যা সন্তানকে আমরা বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি। তাই সকলে মিলে এই আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি।" পরিবারের এহেন ভূমিকায় খুশি হাসপাতালের ডাক্তার -নার্সরা। বক্সিরহাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিএমওএইচ মনোরঞ্জন দাস বলেন, "খুব ভালো ঘটনা ঘটেছে, এলাকায় এটা নজির সৃষ্টি করল।"