শেষ আপডেট: 28th December 2019 07:00
যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু, খুনের মামলা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে
দ্য ওয়াল ব্যুরো, মালদা: নার্সিংহোমের ছাদ থেকে পড়ে এক ব্যক্তির অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে মৃত্যুর কারণ নিয়ে শুরু হল চাপানউতর। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, চুরি করে পালানোর সময় হাইউল শেখ নামে ওই ব্যক্তি ছাদ থেকে পড়ে যায়। তাতেই তার মৃত্যু হয়ে। যদিও হাইউলের পরিবারের অভিযোগ, নার্সিংহোমের ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দিয়ে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে। এব্যাপারে থানা কোনও অভিযোগ নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেছে মৃতের পরিবার।
মৃত ব্যক্তির নাম হাইউল শেখ, বয়স বছর ২৬। তাঁর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কেটে যাওয়ার পরেও ইংরেজবাজার থানার পুলিশ লিখিত অভিযোগ নিতে চায়নি। তাঁর পরিবার জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে ছাদ থেকে পড়ে হাইউলের মৃত্যু হলেও, এই ঘটনার কথা তাঁদের জানানো হয় রাতে। এরপর সপরিবারে তাঁরা ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ মৃতের পরিবারের লিখিত অভিযোগ নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে মালদার পুলিশ সুপার ও আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন মৃত যুবকের পরিবার।
হাইউল শেখের বাড়ি কালিয়াচক থানার সুজাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের স্কুলপাড়া এলাকায়। তবে ঘটনাটি ঘটেছে মালদা শহরের তিন নম্বর গভর্মেন্ট কলোনিতে স্কোয়্যার নার্সিংহোমে। হাইউলের পরিবারের অভিযোগ, ওই নার্সিংহোমের ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে তাঁকে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। স্কোয়্যার নার্সিংহোমের কর্ণধার ডাঃ তন্ময় কুণ্ডু বলেন, “ওই যুবক চুরি করে পালানোর সময় অসতর্ক থাকার জন্যই তিনতলার ছাদ থেকে পড়ে যায়, তাতেই তার মৃত্যু হয়। মৃতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ।
মৃত হাইউল শেখের পরিবারের বক্তব্য, তাঁদের ছেলে চোর তো নয়ই এই ঘটনার সঙ্গেও জড়িত থাকতে পারে না, তাকে খুন করা হয়েছে। তাঁদের বয়ান অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেননি হাইউল। বৃহস্পতিবার ওই নার্সিংহোমে চুরি হয়। নার্সিংহোমের লোকজন গেটের বাইরে হাইউলকে দেখে তাকে ভিতরে নিয়ে যায়। রাতে নার্সিংহোমেই আটকে রাখে। সকালে তার দেহ পাওয়া যায় নার্সিংহোমের রেলিংয়ের উপর।
হাইউলের আত্মীয় মুন্না খান ও আজমত খান বলেন, “বৃহস্পতিবার থেকেই নিখোঁজ ছিল হাইউল শেখ। পরে পুলিশ মারফত জানতে পারি মালদা শহরের স্কোয়্যার নার্সিংহোমের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। আমাদের সন্দেহ, চোর অপবাদ দিয়ে তাকে তিনতলার ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে নীচে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। তার ফলেই হাইউলের মৃত্যু হয়েছে। ইংরেজবাজার থানায় এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। পুরো বিষয়টি নিয়ে এখন আমরা পুলিশ সুপার এবং মালদা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভেবেছি।”
ইংরেজবাজার থানার পুলিশ জানিয়েছে, মালদা শহরের ওই নার্সিংহোমে চুরি করছিল ওই যুবক। তার কিছু ছবি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে। পালাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
হাইউলের পরিবার বলেছে, পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন।