শেষ আপডেট: 19th May 2020 18:30
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকালই জানিয়েছিলেন, আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা তাঁকে বলেছেন, উমফান সাইক্লোন অভিঘাত অতীতের আয়লার থেকেও তীব্র হতে পারে। সর্বশেষ যা পরিস্থিতি তাতে ক্রমশই সেই ধারণাই বদ্ধমূল হচ্ছে প্রশাসনিক কর্তাদের। এ হেন অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ নির্দেশ দিয়েছেন, যেখানে যেখানে উমফানের তীব্রতা বেশি হতে পারে, সেখানে বিদ্যুতের সংযোগ যেন ছিন্ন করে দেওয়া হয়। নবান্নের কর্তারা বলছেন, বিদ্যুতের পোল উপড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বহু স্থানে। তা ছাড়া কলকাতা ও শহরতলিতে প্রচুর গাছ উপড়ে পড়তে পারে। সেই কারণেই এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নবান্নের কন্ট্রোল রুমে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যোগাযোগ করছেন বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে। এদিন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহাকে নির্দেশ দিয়ে মমতা বলেন, ঝড়ের প্রভাব পড়তে পারে এমন সমস্ত জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে। তবে হাসপাতাল ও জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রগুলি যাতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন না হয় তাও দেখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে গাছ পড়ার খবর মিলেছে। গোলপার্ক, সাদার্ন অ্যাভিনিউ, টালিগঞ্জে গাছ ভেঙে পড়েছে। পশ্চিম পুঁটিয়ারিতে একটি পুরনো বাড়ির অংশ ভেঙে পড়েছে বলেও খবর। তবে এখনই তা না সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকে রাস্তায় না নামার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আপাতত হেড কোয়ার্টার অফিসে থাকতে বলেছেন। হাওয়া অফিস জানিয়েছিল দিঘার থেকে দূরত্ব বেড়েছে সুপার সাইক্লোন উমফানের। সেইসঙ্গে মৌসম ভবন বলেছে, ঘূর্ণিঝড় কিছুটা বাঁক খেয়ে সাগরদ্বীপের আরও কাছাকাছি চলে এসেছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রীও বলেন, দিঘার দিকে যায়নি। সাগরদ্বীপের দিকে এগোচ্ছে উমফান। ইতিমধ্যেই পাঁচ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "বুলবুলের সময়ে এক লক্ষ ৮৫ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়ে এসেছিলাম। এবার পাঁচ লক্ষ।" কলকাতাতেও ফুটপাথবাসী থেকে শুরু করে মোট চার হাজার মানুষকে সরানো হয়েছে অন্যত্র। গতকালই মুখ্যমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড়ের গঠন ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, এর তিনটি অংশ। মাথা, চোখ এবং লেজ। প্রথমে মাথা হিট করবে তার পর চোখ বা আই। তার পর লেজ এসে সবটা মুড়িয়ে নিয়ে যাবে। এদিন বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী বলেন উমফানের চোখ সাগরে ঢুকেছে। এখনও টেল তথা লেজ বাকি আছে। ওটা বড় ধাক্কা দেবে। বুধবার রাত দশটা পর্যন্ত দুই চব্বিশ পরগনার জেলা প্রশাসনকে অতিসতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা আয়লার থেকেও ভয়ঙ্কর হতে পারে উমফানের অভিঘাত। এবং সেই দুই চব্বিশ পরগনাতেই যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হতে পারে তারও আশঙ্কা ছিল। এখনও পর্যন্ত উমফানের যা গতিপ্রকৃতি, তাতে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাতেই সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, গোসাবায় ঘণ্টায় ১৬৭ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বইছে।