শেষ আপডেট: 24th September 2023 06:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুক্রবার ফেসবুকে পোস্ট করে জানিয়েছিলেন যে, তিনি রাজনীতি ছাড়ছেন। গতকালও নিজের অবস্থানে অনড় ছিলেন। বলেছিলেন, ইস্তফাপত্র জমা দেবেন। কিন্তু রবিবার সেই চিত্র পাল্টে গেল। তমলুক বিজেপির সহ-সভাপতি প্রলয় পাল (BJP Leader Pralay Pal) রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়ে দিলেন, রাজনীতি ছাড়বেন না, দলের সঙ্গেই থাকবেন।
এখন ফেসবুকে সেই পোস্ট আর দেখা যাচ্ছে না। রাজনীতি না ছাড়ার প্রসঙ্গে এদিন প্রলয় বলেন, রাজ্য, জেলা ও বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সহকর্মীরা রাজনীতি থেকে সরে না দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছেন। বিবেকের যন্ত্রণায় তাঁদের অনুরোধ ফেলতে পারিনি। তাই আগের অবস্থান থেকে সরে এসেছি। আমি রাজনীতিতেই আছি, বিজেপি করব।'
নন্দীগ্রামে (Nandigram) সাংগঠনিক জেলা কমিটির পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই দলের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বাড়িয়েছিলেন প্রলয়। তমুলক সাংগঠনিক জেলার এখন সভানেত্রী হয়েছেন, শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) অনুগামী বিধায়ক তাপসী মণ্ডল। শুক্রবার তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরেই ফেসবুকে বিদ্রোহী পোস্ট করেছিলেন একদা শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতা প্রলয়।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, প্রলয়ের এহেন বিদ্রোহ ছিল আসলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধেই। এবং বুঝে নিতে হবে যে প্রলয়কে প্রশ্রয়ও বেশি দিতে চাননি শুভেন্দু। হতে পারে সেই কারণেই এই অভিমান। বিজেপিতে পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ নিয়ে সরবও হয়েছিলেন প্রলয়।
প্রলয় নন্দীগ্রামের একেবারে স্থানীয় নেতা। কিন্তু তাঁর মহিমা হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছিল একুশের ভোটের সময়ে। তাঁকে ফোন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কথোপকথনের রেকর্ডিং ফাঁস হয়ে গেছিল। মমতাকে প্রলয়কে বলেছিলেন, ‘তুমি একটু দেখে দিও’। পরে রেকর্ডিং ফাঁস হওয়ায় মমতা বলেছিলেন, বিজেপি নেতারা আমাদের লোকেদের এত ফোন করে তাতে দোষ নেই। আর আমার একটা ফোনেই দোষ হয়ে গেল!
নন্দীগ্রামে বিজেপির পুরনো সদস্য ছিলেন প্রলয় পাল। এক সময়ে তাঁর লড়াই ছিল তৃণমূলের শুভেন্দুর বিরুদ্ধেও। কিন্তু শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই তমলুক সাংগঠনিক জেলায় বিজেপি সংগঠনের রসায়ন বদলাতে থাকে। প্রলয় এখন সাংগঠনিক জেলায় সহ সভাপতি হলেও, তাঁর বিশেষ কদর নেই। রাজনীতিতে সহ-সভাপতি পদটাই আসলে আলঙ্কারিক। যদিও শুভেন্দু নন্দীগ্রামে বিজেপির মধ্যে ঐক্যের বার্তা দিতে চেয়েছিলেন। আদৌ যে তা হয়নি, সেটা প্রলয়ের দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত থেকেই স্পষ্ট হয়েছিল। কিন্তু রবিবার প্রলয়ের দল না ছাড়ার সিদ্ধান্তের পর কি বলা যায় বিজেপির অন্দরের বিদ্রোহ ঠেকানো গেছে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর নন্দীগ্রামে প্রলয়ের বিদ্রোহ, দলই ছেড়ে দিতে চান বিজেপি নেতা