শেষ আপডেট: 19th January 2021 16:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত এবং পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পুলিশে এফআইআর দায়ের করলেন বিজেপি কর্মী আইনজ্ঞ তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। আজ, মঙ্গলবার তিনি বাগুইআটি থানায় অভিযোগ করে দাবি করেন, "আমি একজন শান্তিপ্রিয় হিন্দু নাগরিক। দেবী দুর্গার উপাসক আমি। গোমাতাকেও পুজো করি। গরুকে যে কাটবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংবিধানের ৪৮ ধারায় নির্দেশ আছে। এই ধারা মেনে উত্তর প্রদেশ, গুজরাটে গরু খাওয়া বন্ধ হলেও পশ্চিমবঙ্গে হয়নি। আমি একজন আইনজ্ঞ, কলকাতা হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করি। পরিচালক অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের নবমীর দিন গরু খাওয়া এবং দেবলীনা দত্তের মিডিয়া তথা জনসমক্ষে নবমীর দিন গরুর মাংস রান্না করার কথা বলা আইনত অপরাধ।"
ঘটনার সূত্রপাত দিন কয়েক আগে একটি সংবাদমাধ্যমের টক শো। সেখানে তাঁদের মতামত জানিয়েছিলেন অনিন্দ্য ও দেবলীনা। সেই সূত্রেই ওঠে গোমাংসের কথা। অনিন্দ্য জানান তাঁর নবমীর দিন গোমাংস খেতে কোনও অসুবিধা নেই। দেবলীনাও বলেন, তিনি নিজে নিরামিষাশী হলেও প্রয়োজনে নবমীর দিন অনিন্দ্যর বাড়িতে গিয়েও গোরুর মাংস রান্না করে খেতে দিতে পারবেন, কারণ খাওয়া নিতে তাঁর কোনও ছুৎমার্গ নেই! 'অপরাধ' বলতে এই মতামত প্রকাশ্যে জানানোটুকুই। আর এতেই যেন তুষে আগুন পড়ে, যাতে পুড়ে যায় অনেকের ধর্মীয় ভাবাবেগ।
এর পরেই গতকাল দেবলীনার স্বামী তথাগত মুখোপাধ্যায় ফেসবুকে লিখে জানান, ওই টক শোয়ের পর থেকেই তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে শুরু হয় নোংরা আক্রমণ। তথাগত নাম উল্লেখ করে অভিযোগ এনেছেন বিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারির বিরুদ্ধে, তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে নানাভাবে, অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করতে থাকেন দেবলীনাকে। এমনি দেবলীনাকে খুনের হুমকি, রেপ থ্রেট, গণধর্ষণের মতো কথাও বলা হয়। জানতে চাওয়া হয় দেবলীনার 'রেট' কত? এই অশ্লীল আক্রমণগুলির স্ক্রিনশটও পোস্ট করেছেন তথাগত।
তথাগত লিখেছেন, "কাল রাত্তির থেকে সোশাল মিডিয়াতে "রেপ থ্রেট,মাথা কেটে ফেলার হুমকি, গণধর্ষণ, প্রকাশ্যে চাবকানো, ন্যাংটো করে নাচানো-- আরো কতকি, এই ধরনের বিভিন্ন কমেন্ট আসছে দেবলীনা ফেসবুক, ইন্সটা এবং ইউটিউব চ্যানেলে, মাথায় রাখতে হবে এই সব প্রোফাইল অর্থাৎ যারা এই ধরনের কমেন্ট করছেন তাদের প্রোফাইল পিকচারে কারুর রাম সীতা,কারুর শিব স্বয়ং। কিন্তু তাদের দাবী দেবলীনাকে রেপ করা হোক, বা দেবলীনাকে ঘিরে যথেচ্ছ খিস্তি বা দেবলীনার জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে কিছু নোংরা আলোচনা।"
এর পাশাপাশি নিরাপত্তার অভাববোধ থেকেই মহিলা কমিশন ও পুলিশের সাহায্য নেওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন তাঁর ফেসবুক পোস্টে। শুধু যে তাঁর স্ত্রীকেই নোংরা মন্তব্য করা হয়েছে এমন নয়, তথাগতের মাকেও নোংরা ভাষায় আক্রমণ করেছেন অভিযুক্ত বিজেপির কর্মীরা।