শেষ আপডেট: 2nd March 2023 09:48
ভোট গ্রহণের আগে থেকেই দাবি করছিলেন, তিনি জিতবেন। যেমন সবাই বলেন, সব ভোটে বলেন। কিন্তু সবাই কি আর জেতেন? বৃহস্পতিবার সাগরদিঘির (Sagardighi) কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস (Bayron Biswas) যখন একের পর এক রাউন্ড গণনার শেষে ব্যবধান বাড়াচ্ছেন, তখনই কথা বললেন দ্য ওয়াল-এর সঙ্গে। বর্তমান বিধানসভায় কংগ্রেসের কোনও সদস্য নেই। বাইরনই হতে চলেছেন প্রথম কোনও প্রতিনিধি। কিন্তু তাঁর জয় স্পষ্ট হতে এই প্রশ্নও তৈরি হচ্ছে যে, বাইরন কংগ্রেসে কতদিন থাকবেন? মাস কয়েক বাদেই শিবির বদল করে ফেলবেন না তো!
এদিন জয় যখন প্রায় লেখা হয়ে গিয়েছে তখন এই প্রশ্ন শুনেই বাইরন দৃঢ় গলায় জবাব দিলেন, ‘লিখে রেখে দিন, তৃণমূল আমায় কিনতে পারবে না। দরকারে আমি তৃণমূলকে কিনে নেব।’
একুশের সাগরদিঘিতে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন সুব্রত সাহা। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীও ছিলেন। তাঁর প্রয়াণের কারণেই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই কেন্দ্রে একুশের ভোটে কংগ্রেস ছিল তৃতীয় স্থানে। সেখানে শুধু জেতা নয়, ৫০ হাজারের ব্যবধান ঘুচিয়ে জিতলেন বাইরন।
কীভাবে সম্ভব হল? কাদের জন্য পারলেন?
গণনা কেন্দ্রের বাইরে থেকে বাইরন ফোনে বললেন, ‘দাদা যা করেছেন, তা অতুলনীয়। একেবারে মাটি কামড়ে পড়েছিলেন?’ কে দাদা? প্রশ্ন শুনে হাসলেন বাইরন। বললেন, ‘দাদা মানে আমাদের অধীরদা। বুথে বুথে চলে গিয়েছেন। পাড়ার বৈঠকে মানুষের উঠোনে পৌঁছে গিয়েছেন। আমাদের কর্মী সাইদুর রহমানকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। দাদা এক ফোনে থানা ঘেরাওয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ক্যাপ্টেন যেমন সামনে থেকে লড়েন, তেমনই লড়েছেন দাদা।’
বামেরা আপনাকে সমর্থন করেছিল, মাঠে ময়দানে কতটা সক্রিয় ছিল সিপিএম?
এই প্রশ্নেও বাইরন অকপট। স্পষ্ট কথায় বললেন, ‘সিপিএম ১০০ শতাংশ দিয়ে ভোট করেছে। পরিপূর্ণ জোট যাকে বলে, সেটাই হয়েছিল সাগরদিঘিতে।’
একথা ঠিক যে, মুর্শিদাবাদ সিপিএমকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটও বলেছিল, ভোটটা সিরিয়াসলি করতে হবে। জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর তিন জন সদস্য গত এক মাস ধরে সেখানেই পড়েছিলেন। সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘আমরা কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বসে যৌথভাবে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সেটা হল বড় সভা করব না। যা হবে বাড়ি বাড়ি প্রচার। তাতেই ফল মিলল।’
একুশের ভোটে ইতিহাস হয়েছিল। বাংলায় বাম-কংগ্রেসের একজনও প্রতিনিধি জিততে পারেননি। যা স্বাধীনতার পর কখনও হয়নি। বাইরনের জয়ে যেন সাবেক দলের সেই কলঙ্ক ঘুচল। এদিন সার্টিফিকেট পাওয়ার আগেই বাইরন জানিয়ে দিলেন, জয়ের পর তাঁর প্রথম কাজ হবে সাগরদিঘির মানুষের জন্য পরিস্রুত পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা।
ত্রিপুরায় বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার পথে, বুথ ফেরত সমীক্ষা মিলে যাওয়ার আভাস