শেষ আপডেট: 25th September 2023 12:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো, পূর্ব বর্ধমান: রাজ্যের অন্যতম পর্যটন স্থান হিসাবে মান্যতা পেতে চলেছে বৈষ্ণব তীর্থস্থান কুলীন গ্রাম (Bardhaman Kulin Village) । রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে খুব তাড়াতাড়ি কুলীন গ্রাম জায়গা করে নিতে চলেছে বলে জানালেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।
পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের আবুজহাটী ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একটি প্রাচীন জনপদ হল কুলীন গ্রাম। পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে এই গ্রামেই মালাধর বসু জন্মগ্রহণ করেন। তার পৌত্র রমানন্দ বসু ছিলেন চৈতন্যদেবের খুবই অন্তরঙ্গ। বসু পরিবারের আমন্ত্রণেই চৈতন্যদেব কুলীনগ্রামে এসেছিলেন। বসু পরিবারের কৃষ্ণ ভক্তি দেখে খুশি হয়ে শ্রীচৈতন্যদেব পুরীর রথের জন্য কুলীনগ্রামের রেশমের পট্টডোরি পাঠানোর দায়িত্ব বসু পরিবারকে দেন। এই পট্টডোরি অর্থাৎ কাছি দিয়ে পুরীর রথের সঙ্গে বাঁধা হত জগন্নাথ ,বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহ । এমনকি ওই পট্টডোরী মালার মতো করে এই তিন দেবতার গলায় পরানো হত। এখন এই প্রথা আর চালু নেই, তবে বহু কাল পূর্বে বসু পরিবার কুলীন গ্রামে যে রথরাত্রা উৎসবের সূচনা করেছিলেন সেই রথযাত্রা উৎসব পালনে কোনও ছেদ পড়েনি ।
জগন্নাথদেব ছাড়াও কুলীন গ্রামে আরও অনেক দেবদেবীর মূর্তি ও মন্দির রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম হল রাজা বল্লাল সেনের আমলে তৈরি গোপাল মন্দির। গোপাল মন্দিরের সামনে রয়েছে একটি বড় জলাশয় যা গোপাল দিঘি নামে পরিচিত । এই দিঘিতে স্নান করা গঙ্গা স্নানের সমতুল্য বলে মনে করেন ভক্তরা। এ ছাড়াও কুলীন গ্রামের বিভিন্ন মন্দিরে শিবানী, মদনগোপাল, গোপেশ্বর, ভুবনেশ্বরী, রঘুনাথ,কৃষ্ণরায়,গোপীনাথ, কালুরায় এবং হরিদাসের আরাধ্য দেবতা গৌরাঙ্গর পুজোপাঠ হয়। প্রতিবছর রথযাত্রা এবং জন্মাষ্টমী তিথিতে ভক্তের ঢল নামে কুলীন গ্রামে।
বৈষ্ণব তীর্থ স্থান কুলীন গ্রামকে পর্যটন স্থান হিসাবে মান্যতা দেওয়া হোক এই দাবি অনেকদিন ধরেই করে আসছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের পর্যটন দফতরও উৎসাহ দেখানোয় এদিন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ কুলীন গ্রামে যান। জামালপুরের প্রাক্তন বাম বিধায়ক সমর হাজরা, বর্তমান বিধায়ক অলক মাজি ,পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মেহেমুদ খানকে সঙ্গে নিয়ে মন্ত্রী কুলীন গ্রামের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেন। তিনি বলেন,“কুলীন গ্রাম বড় বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র। কুলীন গ্রামকে পর্যটন স্থান হিসাবে মান্যতা দেওয়ার বিষয়টি বিধানসভায় অনেকবার তুলেছেন জামালপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সমর হাজরা এবং বর্তমান বিধায়ক অলক মাঝি। এই সংক্রান্ত নথিপত্র তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রুরাল ট্যুরিজম সেন্টার গড়তে চান। সরকারে আর্থিক সংকট থাকলেও কুলীন গ্রামকে পর্যটন স্থান হিসাবে গড়ে তোলার যাবতীর কাজের প্ল্যান এস্টিমেট হয়ে গেছে।”
আরও পড়ুন: দশমী থেকেই কি বন্ধ হবে হোয়াটসঅ্যাপ? পুরনো স্মার্টফোন পাল্টানোর সময় এসেছে