শেষ আপডেট: 12 December 2021 13:56
পৃথিবী থেকে ক্রমশ মুছে যাচ্ছে সবুজ। একের পর এক নির্মাণ, অরণ্য ধ্বংস, বিষাক্ত গ্যাসের বাড়বাড়ন্ত যেন গিলে খাচ্ছে বসুন্ধরাকে। এক চরম উদ্বেগের মুখে দাঁড়িয়ে জীবজগতের ভবিষ্যৎ। এই পরিস্থিতিতে শুধু গাছ রোপণই নয়, তাকে লালনপালন করাও সমান জরুরি। আর সেই উদ্যোগই নিয়েছেন একদল তরুণ-তরুণী। তাঁরা কেউ কলকাতার, কেউ বোলপুরের। অপূর্ব দাস, সোমনাথ ঘোষ, মৈনাক মণ্ডল, তিয়াসা রায়- এমনই কয়েকজন মিলে চালু করেছেন গাছেদের অনাথ আশ্রম! যার পোশাকি নাম ‘বৃক্ষ ফাউন্ডেশন’।
এবার গাছ বাঁচানো নিয়ে সচেতনতা প্রচারের উদ্দেশে তাঁরাই বোলপুর থেকে কলকাতা, প্রায় ১৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন সাইকেলে চেপে। দূষণহীন যান সাইকেল, তাতে চড়েই ঘাম ঝরিয়ে পার করলেন দীর্ঘ রাস্তা। পথে বিশ্রাম নেওয়ার মাঝেও গাছ বাঁচানোর বার্তা দিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের। কেন এতটা পথ সাইকেলে পাড়ি, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন সংস্থার অন্যতম সদস্য মৈনাক মণ্ডল। বলেন, "যে হারে গাছ কাটা হচ্ছে, তাতে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে অক্সিজেনের পরিমাণ মাত্রাতিরিক্তভাবে কমে যাবে। তখন পিঠে অক্সিজেন সিলিন্ডার আর মুখে অক্সিজেন মাস্ক পরে ঘুরতে হবে সবাইকে। সেই পরিস্থিতির মুখে যাতে পড়তে না হয়, তাই এই সচেতনতা প্রচার।" জানা গেছে, সম্পূর্ণভাবে বিশেষজ্ঞদের দ্বারা এই গোটা পরিকল্পনাটির বাস্তবায়ন করা হয়েছে। গাছেদের বাড়ির জন্য জমি খোঁজা থেকে শুরু করে তাদের পরিচর্যা, সবটাই হয়েছে বৈজ্ঞানিক এবং বাস্তবসম্মত উপায়ে। তাঁদের দাবি, একেবারে অভিনব ভাবনা নিয়ে বৃক্ষ ফাউন্ডেশনই সবার কাছে এই গাছ দত্তক নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে ট্রি পিকিং, এভিয়ারি, সাস্টনেবল ট্যুরিজমের মত প্রোজেক্ট। এই সবকিছুর প্রচারেই বোলপুর থেকে সাইকেলে চেপে বৃক্ষ ফাউন্ডেশনের সদস্যরা এসেছেন কলকাতায়। শনিবার রাতে শিয়ালদহ পৌঁছে সেখানেই রাত কাটান। এরপর রবিবার বিকেল অবধি কলকাতার ধর্মতলা, ময়দান হয়ে রবীন্দ্র সদনেও চলে সচেতনতা প্রচার। পরিবেশকে বাঁচানোর লড়াইয়ে এভাবেই বোলপুর থেকে কলকাতা, একটা বিশাল অঞ্চলের মানুষকে সামিল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন অপূর্ব-তিয়াসারা। এই লড়াইয়ে যেন পরোক্ষভাবে সামিল হয়ে পড়েছেন তাঁদের আশপাশের মানুষগুলোও। আপনারাও চাইলে দত্তক নিতে পারেন তাঁদের বৃক্ষসন্তান!