শেষ আপডেট: 29th December 2022 09:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নাট্যকর্মী অমিত সাহা ও অরূপ খাঁড়াকে বেলেঘাটায় মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় এক নেতা ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সংস্কৃতি জগতের অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন। ১৮ ডিসেম্বর একটি প্রতিবাদ সভাও হয়েছে। সেখানে না গেলেও সেই কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের যে লিখিত বার্তা পাঠিয়েছিলেন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য (Actor Anirban Bhattacharya) তা রীতিমতো বিস্ফোরক।
যিনি অমিত সাহাদের মারধরের ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ তাঁর সম্পর্কে অনির্বাণ লিখেছেন, ‘কে জানে হয়তো কালের অদ্ভুত নিয়মে একদিন বাংলার সংস্কৃতি মন্ত্রীও হয়ে যেতে পারেন, দল বদলালে হয়তো ভারতেরও।’
অতীতে অনির্বাণ বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ, ঘৃণার রাজনীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন। তাঁরই লেখা গান ‘আমি অন্য কোথাও যাব না, আমি এই দেশেতেই থাকব’ ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল একুশের ভোটের আগে। কিন্তু এই প্রথম তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চোখা চোখা বাক্য লিখলেন।
অনির্বাণ ওই বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘যার গায়ে হাত উঠেছে, তার গায়ে আবার হাত উঠতে পারে শীঘ্রই, এবং যিনি হাত তুলেছেন, তিনি তার সাহসে বলীয়ান হয়ে বাংলা মায়ের সুযোগ্য সন্তানের অনেকগুলো সার্টিফিকেট ঘরে বাঁধিয়ে রাখবেন।’
এখানেই থামেননি মন্দারের পরিচালক। অনির্বাণ লিখেছেন, ‘আজ থেকে ১২ দিন আগে কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে অমিতাভ বচ্চন বাকস্বাধীনতার সপক্ষে বক্তৃতা করে গেছেন। শাহরুখ খান সোশ্যাল মিডিয়ার ঘৃণাবাহিনীকে এক হাত নিয়েছেন, সারা ভারতে মুক্তমনা মানুষ হাততালি দিয়ে উঠেছেন। সেদিন যারা মঞ্চে ছিলেন, তারাও দিয়েছেন। তার কিছুদিন পরেই অমিত সাহা ও অরূপ খাঁড়া মার খেয়ে গেলেন, নাট্য উৎসব আয়োজন করার জন্য।একই রাজ্যে! কেন? কারণ অমিত সাহা ও অরূপ খাঁড়া পশ্চিমবঙ্গের বোধ করি একটি ভোটকেও ডিস্টার্ব বা পেট্রনাইজ করতে পারেন না। অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ খান পারেন। তাই, চলুন, আমরা নাটক ছেড়ে একটা মার খাওয়ার উৎসবের দিকে এগিয়ে যাই।’
অতীতেও নাটকের উপর শাসকের রোষ নেমে এসেছিল। বাম জমানার শেষ দিকে অর্পিতা ঘোষের পশুখামার মঞ্চস্থ করা আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল হুগলির সিপিএম নেতা রূপচাঁদ পালের বিরুদ্ধে। অনির্বাণ নির্দিষ্ট করে না বললেও সেই প্রসঙ্গের কথাও উল্লেখ করেছেন তাঁর বিবৃতিতে। লিখেছেন, ‘আমি এই সভায় উপস্থিত থাকতে চেয়েছিলাম, কারণ গায়ে হাত উঠেছে। নিশ্চয়ই আগেও উঠেছে, অভিনেতার গায়ে, নাট্যকর্মীর গায়ে। সুদূর বা অদূর ইতিহাসে। কিন্তু সাম্প্রতিককালে আমার জানার মধ্যে এই প্রথম হাত উঠেছে। আমি প্রতিবাদ করছি, আরও অনেকের সঙ্গে, এটা জেনেই, যে এই প্রতিবাদ ব্যর্থ হবে।’