শেষ আপডেট: 20th July 2020 12:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি যেন এবার হাতের বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। রোজই লাফিয়ে ভাঙছে রেকর্ড। দৈনিক দু'হাজারেরও বেশি মানুষের সংক্রমণ শুরু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড সংখ্যায় বেড়েছে, ৩৬। প্রায় রোজই রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে অভিযোগ আসছে চিকিৎসা না পাওয়ার, বেড না মেলার। এই পরিস্থিতিতে কিছু নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানাল নবান্ন। আজ, সোমবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে এই সিদ্ধান্তগুলি ঘোষণা করেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আজ জানান, রাজ্যে কোভিড হাসপাতাল ও সেফ হোমের সংখ্যা বেড়েছে। উপসর্গহীন রোগীদের ক্ষেত্রে তাঁরা হোম আইসোলেশন ও সেফ হোমে থাকুন। প্রয়োজনে টেলিমেডিসিনের সুবিধা নিতে পারেন। তিনি জানান, কলকাতায় টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য ফোন করা যেতে পারে ০৩৩২৩৫৭৬০০১ নম্বরে। রাজ্যে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আলাপনবাবু। কলকাতায় অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এর জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে ০৩৩৪০৯০২৯২৯ নম্বরে। এছাড়াও স্বাস্থ্য ভবনের দু'টি হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে বলে জানান। সেগুলি হল: ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২ এবং ০৩৩২৩৪১২৬০০। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি যে আরও খারাপ বই ভাল হবে না, তা অনেকেই আন্দাজ করছেন। দিন চারেক আগেই বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, আগামী দিনে সংক্রমণ বাড়বে। কিন্তু কেউ যেন আতঙ্কিত না হন। তিনি ঘোষণা করেন, সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তা রুখতে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতালে আরও বেড বাড়ানোর। সেইসঙ্গে মমতা আরও জানান, বেশ কিছু হাসপাতালকে নতুন করে কোভিড চিকিৎসার জন্য সরকার অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা ইসলামিয়া হসপাতালটা পুরোটা নিয়ে নিচ্ছি। ওখানে শুধু কোভিডেরই চিকিৎসা হবে। পুরো সেট আপটাই ওখানে আছে। শুধু প্রস্তুত করতে কয়েকদিন লাগবে।” এছাড়াও শিয়ালদার কাছে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোডের উপর ডাক্তার আর আহমেদ ডেন্টাল কলেজকেও কোভিড হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। এনআরএস হাসপাতালেও ১১০টি বেড বাড়ানো হচ্ছে কোভিড চিকিৎসার জন্য। বৃহস্পতিবারের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমরা বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গেও কথা বলেছি। ডিসান হাসপাতাল আমাদের জানিয়েছে ওরা আরও একটা বিল্ডিংয়ে কোভিড চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে। ওখানেও কিছু বেড বাড়বে। তা ছাড়া ঢাকুরিয়া আমরিকেও বলা হয়েছে তাড়াতাড়ি সব ব্যবস্থা করে ফেলতে। ওখানেও অনেক বেডের ব্যবস্থা হবে। এছাড়াও অনেক হাসপাতাল তাদের জায়গা অনুযায়ী বেড বাড়ানোর কাজ করবে।” মমতা জানিয়েছেন, সব মিলিয়ে সাড়ে তিন হাজার-চার হাজার বেড বাড়বে পর্যবেক্ষকদের মতে, সংক্রমণ ঝড়ের গতিতে বাড়ছে দেখেই সরকারকে এই ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এখন চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিসর বাড়ানো ছাড়া আর বিকল্প কোনও পথ নেই। সে কথাই আজ আরও একবার স্পষ্ট হল স্বরাষ্ট্রসচিবের কথায়। নিজের বাড়িতেই টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে যতটা সম্ভব চিকিৎসা চালানোর দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি। হাসপাতালগুলোয় রোগী উপচে পড়া রুখতে এই পথে রাজ্য হাঁটছে বলে মনে করা হচ্ছে।